কাদা-পানি ও স্যাঁতস্যাঁতে গরুর হাটে গিয়ে পা নষ্ট করতে কে চায়? তাই সৌখিন ও আরামপ্রিয় ক্রেতাদের দুর্ভোগ কমাতে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে অনলাইনে পশুর ভার্চুয়াল হাট। এই ভার্চুয়াল হাটে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী ঘরে বসেই পাচ্ছেন কোরবানির পশু।দেশের পণ্য কেনা-বেচার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘এখানেই’ এবং ‘বিক্রয়’ ডটকমের ক্লাসিফাইড বা শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রেতারা দেখতে পারেন সেসব গরু-ছাগলের ছবি। শুধু ছবিই নয়, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য পশুর বয়স, দাঁতের সংখ্যা, ওজন, চামড়ার রং, জাত, জন্মস্থান এবং প্রাপ্তিস্থানও দেয়া থাকে পোস্টে। ক্রেতারা চাইলে স্বচক্ষে পশু দেখতে যেতে পারেন। আর ছবি দেখই ক্রয় করতে চাইলে বিক্রেতা সেই পশু পৌঁছে দেবেন তার ঘরে।বিক্রয় ডটকমের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রের একজন এক্সুকিউটিভ জাগো নিউজকে জানান, ঈদ উল আজহা উপলক্ষে পশু বিক্রেতাদের বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে বিক্রয়ডট কম। এছাড়াও পশু কেনার পর ক্রেতার বাড়িতে সেই পশু পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য অবশ্য ৩ হাজার টাকা ডেলিভারি চার্জ দিতে হবে ক্রেতাকে।অনলাইনে গরু বিক্রির ধারণা বাংলাদেশের জন্য কিছুটা নতুন হলেও এখানে ক্রয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন ক্রেতারা। গোলাম মুজতবা নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় বর্তমানে ঢাকার যা অবস্থা, হাটে গিয়ে গরু কেনা, তারপর তাকে বাড়িতে আনা, সব মিলে প্রতিবছর ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই এবার অনলাইনেই গরু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১০টা গরু দেখে যেটা পছন্দ হবে সেটা দেখতে ইচ্ছে করলে বিক্রেতার কাছে চলে যাবো। কোনো ঝঞ্ঝাট নেই।হাসানুল ইমন নামে আরেক ক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, শুনলাম ভারত থেকে এবার গরু আসবে না, গরুর দাম বাড়তি হতে পারে। তাই অনলাইন থেকে আগেভাগেই গরু কিনে ঈদের আগে নিশ্চিন্তে থাকতে চাই।২০১৩ সাল থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশে অনলাইনে গরু ক্রয়-বিক্রয় শুরু হলেও এবার আগেভাবেই ব্যবসায়ীরা গরুর প্রদর্শনী শুরু করে দিয়েছেন। তবে এদের মধ্যে মৌসুমি ব্যবসায়ীর সংখ্যাই বেশি।পুরান ঢাকার মৌসুমি গরু বিক্রেতা শহীদুল্লাহ জনি জাগো নিউজকে জানান, হাটে বিক্রির জন্য তিনি ৩০টি গরু কিনে দিনাজপুরে রেখে এসেছেন। সেখান থেকে মোবাইলে প্রতিটি গরুর ৪টি এঙ্গেলে ছবি তুলে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।তিনি বলেন, গরুগুলো আরো ১৮-২০ দিন পর হাটে তোলা হবে। এর আগেই যদি অনলাইনে বিক্রি করা যায় তাতে খরচ অনেকটা কমে আসবে। তাই বিজ্ঞাপন দেয়া।হাটে নিয়ে গিয়ে গরু-মহিষ বিক্রির প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে থাকলেও বর্তমানে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে বেচা-কেনার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেশি সাড়া মিলছে।অনলাইনে এসব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কেনা-বেচা বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিক লেনদেন অনেকাংশে বাড়বে। আরো জনপ্রিয়তা পাবে বাংলাদেশের ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো।এআর/একে/পিআর
Advertisement