‘পুরান ঢাকার মানুষ খানেওয়ালা, পকেটে টাকা না থাকলেও ঋণ করে খায়’ পুরান ঢাকার মানুষ সম্পর্কে যুগ যুগ ধরে এমন জনশ্রুতি রয়েছে। একে সুনাম বা বদনাম যে নামেই অভিহিত করা হউক না কেন একথা অধিকাংশ পুরান ঢাকার মানুষ বিশেষ করে ঢাকাইয়াদের ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য। রমজান এলে কোন এলাকার কোন রেস্টুরেন্টে মজাদার ইফতারের আইটেম রয়েছে তা খুঁজতে প্রতিদিনই বিভিন্ন ইফতারের দোকানে ঢু মারা চাইই চাই।
Advertisement
বুধবার বিকেল পৌনে ৫টা। লালবাগের ৪৪, হরনাথ ঘোষ রোডের, রয়েল রেস্টুরেন্টের ভেতরে বাইরে মানুষের জটলা। থরে থরে সাজিয়ে রাখা ইফতার সামগ্রী দেখে পছন্দসই বিভিন্ন ইফতারের আইটেম কিনে ফেলছেন। দাম কম কি বেশি তা নিয়ে ক্রেতাদের তেমন মাথাব্যথা নেই।
রয়েল রেস্টুরেন্টের একজন কর্মকর্তা জানান, রমজানে দুপুর পর্যন্ত রেস্টুরেন্টটি বন্ধ থাকে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শুধুমাত্র ইফতার সামগ্রী বিক্রয়ের জন্য রেস্টুরেন্ট খোলা হয়।
মো. আমির হোসেন নামে এক কর্মচারী জানান, এবারের রমজানে বিভিন্ন আইটেমের মধ্যে প্রথম দিনই মিশরী নান আর খাসির রান (লেগ রোস্ট) ক্রেতাদের বেশি আকৃষ্ট করেছে। পুরান ঢাকার অনেকে জামাইয়ের বাড়িতে এ দুটো আইটেমসহ বিভিন্ন ইফতার পাঠান।
Advertisement
প্রতি পিস মিশরী নান ১০০ টাকা, কাশ্মীরি নান ৫০টাকা, কাশ্মীরি খাসির রানের কাবাব ১২০০ টাকা, মুরগি মোসাল্লাম ৩৫০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট ১৬০ টাকা, চিকেন টিক্কা (হাফ) ১৮০ টাকা, মুরগির টিক্কা (হাফ) ১০০ টাকা, জালি কাবাব ৩০ টাকা, সুতি কাবাব ১২০ টাকা, খাসির রোস্ট লেগ ৬০০ টাকা, চিকেন ডামেস্টিক ৭৫ টাকা, স্প্রিং রোল ১০০ টাকা, জালি কাবাব ৩০ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০ টাকা, চিকেন সমুচা ১৫ টাকা, পাত্তি সমুচা ১২টাকা, কিমা সমুচা ৭ টাকা, ডিমচপ ১৫ টাকা, ডিম পোয়া ১৫ টাকা, কিমা চপ ২০টাকা, ডিম চপ ২০ টাকা, আলুচপ, বেগুনী ও আলুচপ ৫ টাকা, খাসির বিরানী (হাফ) ১৬০ টাকা, খাসির কাচ্চি ১৮০ টাকা (হাফ), মোরগ পোলাও ১৮০ টাকা, গরুর তেহারি ১৫০ টাকা।
এছাড়া প্রতি লিটার হালিম ৩৫০ টাকা, পেস্তা শরবত ২৭০ টাকা, লাবাং ১৮০ টাকা, বোরহানি ১৭০ টাকা, ফালুদা ১০০ টাকা, দই বড়া (হাফ) ১২০ টাকা, পরোটা ৩৫ টাকা ও শিক কাবাব ১২০ টাকা।
পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ানের বাসিন্দা আলমাস হোসেন বলেন, ‘বাপ দাদার রেওয়াজ অনুযায়ী রোজার মাসে জামাইয়ের লাইগ্যা বালাবোড়া (ভালমন্দ) ইফতার পাঠাইতে অয়। আইজ রয়েল থাইক্যা মিশরী নান আর খাসির লেগ রোস্ট কিইন্যা পাঠাইতাছি।’
শাহনাজ নামে এক গৃহবধূ বলেন, রয়েলের ইফতারি বেশ মজাদার। তবে তেলের আধিক্য বেশি। তবে পেস্তা বাদামের শরবতটা বেশ মজাদার।
Advertisement
এমইউ/জেএইচ/পিআর