দেশজুড়ে

শরীয়তপুরে পদ্মার ভাঙনে ৫শ পরিবার গৃহহীন

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত পাঁচ দিনে শরীয়তপুরের ১৫টি গ্রামে ৫শ পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে জাজিরা উপজেলার দূর্গারহাট বাজারটি।নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর গ্রামে এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে থাকায় একটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও বিদ্যালয়ের ভবন নিলামে বিক্রি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পদ্মা নদীর পানি গত কয়েক দিন ধরে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কিছু এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার হতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চর আত্রা ইউনিয়নের মুন্সি কান্দি, বেপারী কান্দি, কেদারপুর ইউনিয়নের কেদারপুর, ওয়াবদা, সুরেশ্বর, জাজিরা উপজেলার বড় কান্দি ইউনিয়নের মীর আলী মাদবর কান্দি,তাইজ উদ্দিন মাদবর কান্দি, রঞ্জন ছৈয়াল কান্দি,মৃধা কান্দি, কোতোয়াল কান্দি,মোকলেছ বেপারী কান্দি, সরদার কান্দি, পালেরচর ইউনিয়নের সরদার কান্দি, মাঝি কান্দি, বিলাশপুর ইউনিয়নের আকন কান্দি, মেছের চেয়ারম্যান কান্দি ও মোহন খাঁর কান্দি গ্রামের তিনশ পরিবার গৃহহীন হয়েছে। গ্রামগুলোর প্রায় পাঁচশ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। জাজিরা উপজেলার দূর্গারহাট বাজারটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। বাজারের ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে থাকায় বড় কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৪১ নম্বর ছুরির চর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।বড় কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফয়জল মুন্সি বলেন পদ্মার ভাঙনে ভবনটির কিছু অংশ দেবে গেছে। যে কোনো সময় এটি নদীতে বিলীন হতে পারে। তাই উপজেলা প্রশাসন নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। এ বছর আমাদের ইউনিয়নে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।দূর্গারহাট বাজারের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক দিনের ভাঙনে আমাদের বাজারটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। বসত বাড়ি, ফসলি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এখন কিভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেঁচে থাকবো আল্লাহই জানেন।নড়িয়া উপজেলার মুন্সি কান্দি গ্রামের রিয়াজ মুন্সি জাগো নিউজকে জানান, কয়েক দিনের ভাঙনে চর আত্রা ইউনিয়নে দেড় শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। বসত বাড়ি ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় সবাই নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।শরীয়তপুরের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল খালেক জাগো নিউজকে জানান, পদ্মা-মেঘনার ভাঙনে শরীয়তপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রতিবছর ভাঙছে। আমার কার্যালয়ে কোনো বরাদ্দ না থাকায় ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না।শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস জাগাে নিউজকে জানান,পদ্মার ভাঙনে এবছর অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ইতোমধ্যে চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কয়েকটি সরকারি স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় তা নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিত বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যালয় ভবন সরিয়ে অন্যত্র স্থাপন করার জন্য আমরা আর্থিক সহায়তা করছি।মো. ছগির হোসেন/এমজেড/এমএস

Advertisement