প্রথম রমজানের শেষ বিকেলে চকবাজারে পাশাপাশি দুটি ইফতারের দোকানের একটিতে একজন মধ্যবয়সী লোক চিৎকার করে অ্যাই বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায় বলে ক্রেতাদের ডাকছিলেন। ঠিক তার পাশেই অপর একটি দোকান থেকে আনুমানিক নয়-দশ বছরের একটি ছেলে গলা ফাটিয়ে বলছিল, সব বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়। না খাইলে, না লইলেই মিস, দেশি নেন, দেশি খান বলে সেও ক্রেতাদের ডাকছিল।
Advertisement
অসম দুই বয়সী দোকানির ডাকাডাকিতে ক্রেতারা একবারের জন্য হলেও তাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতারের বিভিন্ন সামগ্রীর মধ্যে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামের খাবারটি আদি ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি আইটেম। জানতে চাইলে সালেকিন নামে এক দোকানি জানালেন, ডাল চিড়া, ভাজা চিড়া, খাসির কাবাব, খাসির রানের মাংস, খাসির মগজ, খাসির কলিজা, মুরগির মাংস, হাসের মাংস, ডিম, আলুভাজি ও ঘিয়ের সঙ্গে ১২ আইটেমের মশলা মিশিয়ে বড় বাপের পোলায় খাই তৈরি হয়।
তিনি জানান, ৭৮ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় ঐহিত্যবাহী এ খাবার বিক্রি করছেন। গত বছর প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও মাংস ও ঘিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবার সরেজমিন পরিদর্শনেও এ খাবার আইটেম তৈরি করতে বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে বিভিন্ন আইটেম ছিড়ে মেশাতে দেখা যায়।
Advertisement
পাশের দোকানের সাব্বির হাসান নামে এক শিশু বলে, এখন সব বাপের পোলায় ইফতারের সব আইটেম খায়। শিশুটি ক্রেতাদের খাবার চেখে দেখতে অনুরোধ জানাচ্ছিল।
এ ছাড়া চকবাজারের ইফতার সামগ্রীর মধ্যে সুতা কাবাব আরেকটি জনপ্রিয় খাবার। গরুর ও খাসির মাংসের দাম বাড়ায় প্রতি কেজি গরুর কাবার ৮০০ ও খাসির কাবার ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। অনেক ক্রেতা দাম জিজ্ঞাসা করলেও বেশি দাম হওয়ায় না নিয়েই ফিরে যাচ্ছিলেন।
এমইউ/এনডিএস/পিআর
Advertisement