ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সোমবার সকালের দিকে সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ একটি প্যানেল রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে দেয়ার পর নারী আইনজীবী ও অলাভজনক বেশ কিছু গ্রুপের সদস্যরা আদালতের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অন্তত ৫৫ জনকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।
Advertisement
সিপিআইএমের নেতা বৃন্দ কারাত বলেন, আদালতের এই প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি অস্বচ্ছ মনে হচ্ছে...কেন হয়রানির শিকার যারা হয়েছেন, তারা বিচার পাবেন না। সুপ্রিম কোর্টের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে এখন আরো বেশি প্রশ্ন উঠছে। এটা অন্যায়।
সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এক বিক্ষোভকারীর হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা, সত্য এবং বৈষম্যহীন বিচারপ্রক্রিয়া অত্যন্ত জরুরি। অপর এক বিক্ষোভকারীর হাতে দেখা যায়, সুপ্রিম ইনজাস্টিস লেখা প্ল্যাকার্ড।
আরও পড়ুন : বিএসএফ জওয়ানের হুমকি : ৫০ কোটি টাকা পেলে মোদিকে খুন করবো
Advertisement
আইনজীবী অমৃত আনন্দ চক্রবর্তী এক টুইট বার্তায় বলেন, আমাদের বিক্ষোভ দেখানোর জন্য পাঁচ মিনিটেরও অনুমতি দেয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট একটি প্রহসনমূলক প্রক্রিয়ার অনুমোদন দিয়েছে এবং কোনো ধরনের সমালোচনা সহ্য করছে না। হাজারো মৃত্যুর ভিড়ে আইনের শাসনের মৃত্যু ঘটেছে।
গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে এক নারী আইনজীবী অভিযোগ রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। এতে তিনি বলেন, গত বছর প্রধান বিচারপতি গগৈ তাকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন। তখন তিনি জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন।
হলফনামায় ওই নারী জানান, প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ‘আমার কোমর জড়িয়ে ধরেন, আমার সর্বাঙ্গে হাত বুলান’ এবং শরীর দিয়ে দেহ চেপে ধরেন। তিনি তখন দু’হাত দিয়ে তাকে ধাক্কা মেরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর তাকে তিনবার বদলি করা হয় এবং গত ডিসেম্বরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার স্বামী এবং ভাইকেও চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন : নিচুবর্ণের প্রেমিককে বিয়ে করায় অন্তঃসত্ত্বাকে পুড়িয়ে হত্যা
Advertisement
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান বিচারপতি জানান, এ ঘটনার পেছনে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিপন্ন বলেও মন্তব্য করেন গগৈ। বিষয়টি নিয়ে শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। গত সপ্তাহে গগৈ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বাকি বিচারপতিদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, তিন বিচারপতির একটি প্যানেল এ নিয়ে অন্তর্বর্তী তদন্ত চালাবে।
সোমবার ভারতের এই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী তদন্ত কমিটি। দেশটির শীর্ষ এই আদালত বলছে, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে না। প্রতিবেদন প্রকাশ না করার ঘোষণা আসার পর কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ করেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা।
সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়া ট্যুডে।
এসআইএস/পিআর