দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম প্রধান দেশ ব্রুনাইয়ে সমকামিতার জন্য পাথর ছুড়ে মৃত্যুর শাস্তি সংবলিত আইন থেকে সরে এসেছে দেশটি।
Advertisement
গত ৩ এপ্রিল দেশটির দণ্ডবিধিতে মৃত্যুদণ্ডের ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। তখন বিশ্বজুড়ে তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কিন্তু মাত্র একমাসের মাথায় এ আইন থেকে সরে আসার কথা জানালেন দেশটির সুলতান।
রোববার নতুন আইনে থাকা মৃত্যুদণ্ডের বিধানের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুলতান হাসানুল বলকিয়া। আইনটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের প্রতিবাদ ও দেশটিকে বয়কটের ঘোষণার পর এমন সিদ্ধান্ত এলো।
যদিও দেশটিতে সমকামিতা আগে থেকেই নিষিদ্ধ ছিল তবে এর শাস্তি ছিল ১০ বছরের কারাদণ্ড।
Advertisement
এর আগে কিছু অপরাধের জন্য বিধান থাকলেও ১৯৫৭ সালের পর থেকে ব্রুনেই কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি।
গত মাসেই দেশটির ইসলামি আইন বা শরিয়ার কঠোর বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিল। এক বক্তৃতায় সুলতান বলেছিলেন, যে শরিয়া পেনাল কোড অর্ডার বা এসপিসিওর বিষয়ে ওঠা প্রশ্ন নিয়ে তিনি সচেতন আছেন।
এখন এসপিসিওর ওপর স্থগিতাদেশ দেয়ার সময়েও তিনি নতুন আইনের পক্ষে কথা বলেছেন। দেশটিতে এবারই প্রথম শাসক কেউ প্রকাশ্যে নিজের করা আইনের বিষয়ে কথা বললেন।
ব্রুনাইয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ অধিবাসীর মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা দুই তৃতীয়াংশ।
Advertisement
আইনটি সম্পর্কে কী জানা গেল?
দেশটির শরিয়া আইনের প্রথম বাস্তবায়ন হয় ২০১৪ সালে। যদিও তখন সাধারণ আইন ও শরিয়া আইন দুটোই চালু থাকার কথা বলা হয়। প্রথম দফায় কিছু অপরাধের জন্য জেল-জরিমানার বিধানের ঘোষণা দেয়া হয়।
এরপর গতমাসে দ্বিতীয় ধাপে ঘোষণা করা হয় যে সমকামিতার শাস্তি হবে পাথর ছুঁড়ে মৃত্যু।
আইনে আরও আছে :
•নবী মুহাম্মদের অবমাননা, ভেজাল মেশানো, ধর্ষণসহ কিছু অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
•লেসবিয়ানদের জন্য ৪০টি বেত্রাঘাত বা ১০ বছর জেল।
•চুরির শাস্তি হাত বিচ্ছিন্ন করা।
•১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু শেখাতে প্রভাবিত করার জন্য জেল জরিমানা।
তবে এ আইন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বিশ্বজুড়ে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলে এটি মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র বিরোধী, যা ২০০৬ সালে ব্রুনেই রেটিফাই করেছিল।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
জেডএ/এমকেএইচ