এটা স্বস্তির বিষয় যে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে যে ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল তা হয়নি। পূর্বাভাস অনুযায়ী যথাযথ প্রস্তুতি ও উপকূলের মানুষকে সাইক্লোন সেন্টারে সরিয়ে নেয়ায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি সহনশীল মাত্রায় নিয়ে আসা গেছে। এরপরও প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়া জোরদার করা প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এই মুহূর্তের জরুরি কর্তব্য।
Advertisement
গত কয়েকদিন ধরে ফণীর শঙ্কায় গোটা দেশবাসী আতঙ্কে ছিল। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় নেয়া হয়েছিল সব ধরনের প্রস্তুতি। সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছিল। গণমাধ্যমে জানানো হচ্ছিল ফণীর সর্বশেষ গতিবিধির কথা। উপকূলবর্তী লোকজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল আশ্রয় কেন্দ্রে। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমও প্রস্তুত ছিল।
এত প্রস্তুতির পরও ফণীর তাণ্ডবলীলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। গতকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ জন নিহতের খবর এসেছে গণমাধ্যমে। এছাড়া ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড়ের চরাঞ্চলে শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে অনেক গাছ। শনিবার ভোর ৪টার দিকে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামে প্রচণ্ড গতির ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে ও গাছপালা তছনছ হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় বেশ কয়েকটি এলাকার নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গভীর রাতে ওইসব এলাকার বেড়িবাঁধগুলোতে ভাঙন ধরলে এলাকাবাসী তা মেরামত করেন। তবে জোয়ারের কারণে এখন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনের স্থানগুলো প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
Advertisement
দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে। এবারও ফণীর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম চালাতে হবে। অবকাঠামোগত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও কী ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটি ভাবতে হবে এখই।
এইচআর/এমএস