ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে শনিবার সকাল থেকেই চট্টগ্রামে দমকা বাতাস শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে সাগরের পানি। এতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়িসহ ফসলাদি।
Advertisement
শনিবার (৪ মে) দুপুর ১২টার দিকে নগরের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের নির্মাণাধীন বাঁধ ভেঙে আকমল আলী রোড এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে বর্তমানে ওই এলাকায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বেড়িবাঁধ ভেঙে জেলার আনোয়ারা উপজেলার গহিরা, সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর ও সন্দ্বীপ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া নগরের আশকারদীঘি এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে কিছু সময়ের জন্য যানচলাচল বন্ধ ছিল।
এর আগে সকালে রোদ ঝলমলে আকাশ দেখে পথচলা শুরু হলেও বেলা সাড়ে ১০টা থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েন নগরের কর্মজীবী মানুষ। বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসের কারণে রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যা অনেক কমে যায়। প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা একেবারেই কম। বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ।
Advertisement
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আজ সারাদিনই চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি পড়বে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণও বাড়তে পারে। অমাবশ্যার কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে বেশি উচ্চতায় আছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ৪৫-এ জানানো হয়, ফণী দুর্বল হয়ে দুপুর ১২টায় দেশের পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হবে। এ কারণে সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কি.মি. বেগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এর ফলে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
Advertisement
অমাবশ্যা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের কারণে উপকূলীয় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবু আজাদ/বিএ/এমএস