ভারতের ২০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী ক্রমেই দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগাচ্ছে। রাতেই আঘাত হানবে গোটা রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের আঘাত হানার পর এটি বাংলাদেশে অভিমূখে ছুটবে।
Advertisement
ফণী ভয়াবহতা বিবেচনায় গত কয়েকদিন আগে থেকেই সতর্কতা জারি করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এত কিছু সত্বেও ফণীর ছোবলে আটজন নিহত ও ১৬০ জন আহত হয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে ওড়িশা রাজ্যে আঘাত হেনেছে ফণী। ফলে গাছ ও বাড়িঘর ভেঙ্গে পড়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষ। প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। ওড়িশা সরকার ১১ লাখের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। তবে এর মধ্যে অন্তত ৬০০ জন নারীই সন্তানসম্ভবা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার রাজস্থানে এক র্যালিতে বলছেন, আমি আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, কেন্দ্র এবং গোটা জাতি তাদের পাশে আছে। ঘূূর্ণিঝড় ফণীতে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোতে ১০০ কোটিরও বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
Advertisement
কলকাতা থেকে আর বেশি দূরে নেই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। ওড়িশায় আঘাত হানার পর পশ্চিমবঙ্গের খুব কাছাকাছি চলে আসা ফণী আজ মাঝ রাতেই আঘাত হানবে গোটা রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের আঘাত হানার পর এটি বাংলাদেশে অভিমূখে ছুটবে।
ইতোমধ্যেই কলকাতায় শুরু হয়েছে ব্যাপক বৃষ্টি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ভারতে ৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। তবে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে, প্রবল শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি কিছুটা কমেছে।
ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, দিঘা ও মন্দারমণিতে উত্তাল হয়ে ওঠা সমুদ্রের ঢেউ ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু হয়ে আছড়ে পড়ছে উপকূলে। সমুদ্র তীরের বাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। কলকাতা থেকে ২০০ কিলোমিটার এবং দিঘা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ফণী।
সন্ধ্যার পর থেকেই ওড়িশা লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে ঝড় শুরু হয়েছে। কলকাতায় যখন ফণী প্রবেশ করবে, তখন ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। তবে রোববারের পর থেকে ফণীর প্রভাব থাকবে না এবং দুর্যোগ পুরোপুরি কেটে যাবে।
Advertisement
তবে ঝড়ের গতিবেগ শুরুতে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার হলেও ধীরে ধীরে সেই বাড়তে পারে। মাঝরাত নাগাদ সেই ঝড়ের গতি হতে পারে পৌঁছাতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি । উপকূলবর্তী এলাকায় তা ১১৫ কিলোমিটারে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
শনিবার ভোর রাতে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় ফণীর আছড়ে পড়ার কথা থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা শহরের রাস্তাঘাটে সেই আতঙ্কের প্রতিফলন দেখা যায়। মেদিনীপুরে জলদা, চাঁদপুরের বাসিন্দাদের অনেকেই পরিবার নিয়ে নিকটবর্তী সাইক্লোন রিলিফ সেন্টারে আশ্রয় নেন।
ফণী ভয়াবহতা বিবেচনায় গত কয়েকদিন আগে থেকেই সতর্কতা জারি করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এত কিছু সত্বেও ফণীর ছোবলে আটজন নিহত ও ১৬০ জন আহত হয়েছেন।
এসআর