আন্তর্জাতিক

ফণীর ছোবলে ভবনে আগুন, মুহূর্তেই পুড়ে ছাই

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ১৭৫ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল শক্তি সঞ্চয়কারী এই ঝড়ের প্রাথমিক তাণ্ডব শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে দমকা হাওয়ার প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে।

Advertisement

ফণীর প্রাথমিক তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুর শহরের একাংশ তছনছ হয়ে পড়েছে। ২৪ পরগনায় তীব্র বাতাসের সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে একটি বাড়ি। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

জিনিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,পশ্চিমবঙ্গে দুপুরের পর থেকে তীব্র বাতাস ও বৃষ্টি বইছে। এর মাঝে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির নন্দকুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহাম্মদ নগর গ্রামে কয়েকটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সকালের দিকে ওড়িশার স্থলভাগে ফণী আছড়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর রায়দিঘিতে শুরু হয় ঝড়।

আরও পড়ুন : ওড়িশায় ৬ প্রাণ কেড়ে পশ্চিমবঙ্গের পথে ফণী (ভিডিও)

Advertisement

তুমুল ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ওপর একটি বাড়ির ওপর। এতে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় বাড়িটিতে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় দ্বিতল এই বাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে ধান কেটে ঘরে তুলে রেখেছিলেন। আগুনে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। আগুনে পুড়ে যায় ঘরে মজুত করা ধান। তবে ঘটনার সময়, বাড়িতে কেউ না থাকায়, কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহরের ওপর দিয়েও সকাল ১১টার দিকে প্রচণ্ড ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ের দাপটে শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তালপুকুর এলাকায় ভেঙে পড়েছে কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি। উড়ে গেছে অ্যাজবেসটসের ছাউনি, টালির চালা। চন্দ্রকোনা রোডের মহারাজপুরে তিনটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফনি ভারতের ওড়িশা উপকূল পুরীর নিকট দিয়ে অতিক্রমরত। এটি বর্তমানে ওড়িশা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে অবস্থান করছে।

আরও পড়ুন : ফণী আছড়ে পড়ার মুহূর্তের ভিডিও

Advertisement

খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে শুক্রবার মধ্যরাত নাগাদ। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আজ সকাল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্রগ্রাম, নোয়াখালী, ললক্ষ্মীপুর, ফেনী,চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা,পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি,বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ -৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হতে পারে।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ওড়িশার পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। ফণীর তাণ্ডবে রীতিমতো লন্ডভন্ড ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রদেশে প্রাণ গেছে অন্তত ছয়জনের।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকবে ফণী। সন্ধ্যার দিকে বাতাসের গতিবেগ নেমে আসতে পারে ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটারের নিচে।

এসআইএস/পিআর