প্রবাস

স্পেনের টেনেরিফে উৎসবমুখর পরিবেশে বর্ষবরণ

স্পেনের টেনেরিফে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে। উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গত ২৯ এপ্রিল বিকেল ৩টায় স্পেনের টেনেরিফের স্থানীয় একটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

Advertisement

শুরুর নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলাদেশিদের মিলনমেলায় পরিণত হয় স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ। দেশীয় নানান রঙ আর বর্ণের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শিল্পী ও উপস্থিত দর্শকের সম্মিলিত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো..’ গানের মুর্ছণা তুলে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠানমালা।

অনুষ্ঠানে দেশীয় নানারকম খাবার দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। খাবারের তালিকায় ছিল ইলিশ, রুই মাছ ও দেশীয় রেসিপিতে তৈরি মাংস, ভাজি, ভর্তা, খিচুড়ি, চটপটি, ফুচকা, মোয়া, রকমারি পিঠা, মিষ্টান্ন, দই, গুলের শরবত। সঙ্গে ছিল পান সুপারীর আয়োজন। উপস্থিতির মধ্যে ছিল প্রায় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার তাদের সন্তানদের নিয়ে ঐতিহ্যময় এই বৈশাখী আয়োজন দেখতে আসেন।

উৎসবে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে বাংলার লোকগীতি, দেশাত্মবোধক, জাগরণী গান ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিপ্লব, সুমনা আক্তারসহ প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীরা। এ ছাড়া দেশীয় খেলাধুলা, নাচ, কবিতা আবৃত্তি, অণুগল্প পাঠের আসরে মেতে ছিল উৎসব প্রাঙ্গণ।

Advertisement

সুমি আক্তার ও সাঈদ আহমেদের যৌথ সঞ্চালনায় দিনব্যাপী চলা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাকির হোসাইন, সাঈদ আহমেদ, আমির হোসেন মন্টু, আলিম উদ্দিন, আলমগীর তাজ, জুয়েল খান, ফরহাদ হোসেন, নিয়ামত উল্লা, মাহবুব আলম, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল বাসিত, কামাল উদ্দিন খোকা মিয়া, মহিউদ্দিন, সাদমান প্রমুখ।

আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা সংগঠন টেনেরিফের সুমি আক্তার, নুরুন নাহার শ্রাবনী, তানজিনা আক্তার মিতু, রোকসান আক্তার রিনি, শারমিন আক্তার মুননি, তুলি সেন, ঝুমু আক্তার, শিলা আক্তার, অননি, জেরিন, মোহচেনা বেগম, তিথি আক্তার, নাজিয়া আক্তার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের নববর্ষের উপহার হিসেবে কাচের চুড়ি, তাল পাতায় নির্মিত হাত পাখা, মাটির গয়না ও অন্যানো সামগ্রী বিতরণ করা হয়।অনুষ্ঠানের আয়োজকরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান, প্রবাসে বৈশাখ পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো পরস্পরের মাঝে ভ্রাত্বিত্ববোধ বাড়িয়ে তোলা এবং প্রবাসে দেশের আবহমান সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে মানুষের মাঝে জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখা।

তারা আরো জানান, এখনে ভিনদেশিদের কাছে আমাদের সংস্কৃতি পৌঁছে দেয়াও আমাদের বড় একটা উদ্দেশ্য। আগামীতে এসব অনুষ্ঠানে আরও নতুন মাত্রা এনে এবং ভিনদেশিদের আর বেশি নিমন্ত্রণ করে বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি প্রবাসের মাটিতে তুলে ধরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।

Advertisement

এমআরএম/এমকেএইচ