বিনোদন

ওপার বাংলায় ছবির বাজেট বেড়েছে

সীমান্তের ওপারের শহর কলকাতার উঠতি নায়ক ওম প্রকাশ সাহানি। শমরেশ মজুমদারের গোয়েন্দা উপন্যাস অবলম্বনে ‘কালিম্পঙে সীতাহরণ` এবং অন্য একটি কমার্শিয়াল ছবি ‌‌‘অ্যাকশান’ নামক দু’টি ছবিতে অভিনয় করে এ পর্যন্ত টালিগঞ্জে আলোচনায় এসেছেন। ওপার বাংলার পাশাপাশি তিনি নাম লিখিয়েছেন ঢাকাই ছবিতেও। গেল ঈদে মুক্তি পাওয়া জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ওপারের এসকে মুভিজের বিগ বাজেটের ছবি ‘অগ্নি-২’তে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন ওম। সম্প্রতি দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত নতুন চলচ্চিত্র ‘অঙ্গার’-এও চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে জাঁকজমকপূর্ণ পরিসরে ‘অঙ্গার’ ছবির মহরত হয়। সে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ওম। অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে তার সাথে কথা বলেন নাহিয়ান ইমন। ওমের সাথে আলাপের চুম্বক অংশটুকু জাগোনিউজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-জাগোনিউজ : এই নিয়ে দু’বার ঢাকায় আসলেন। কেমন লাগছে?ওম : চলতি বছরের ১৩ জুলাই ‘অগ্নি-২’র প্রচারণায় প্রথমবার ঢাকায় এসেছিলোম। আর এবার এসেছি ‘অঙ্গার’ ছবির জন্য। (উচ্ছ্বাস নিয়ে) খুব ভালো লাগছে আবারো ঢাকায় আসতে পেরেছি বলে। এখানকার মানুষ, পরিবেশ, সবকিছুকে ভালোবেসে ফেলেছি। জাগোনিউজ : ‌‌‘অঙ্গার’ ছবিতে আপনাকে কেমন চরিত্রে দেখা যাবে?ওম : ছবিটি মূলত রোমান্টিক-অ্যাকশান ঘরানার আদলে নির্মিত হবে। এ ছবিতে আমার চরিত্রের নাম বিষু। এখানে আমি দরিদ্র চাকরের ভূমিকায় অভিনয় করবো। একসময় ধনীর দুলালীর সাথে প্রেম হবে। এরপর একেরপর এক সংঘাত ক্লাইম্যাক্স এ গল্পের কাহিনী গড়াবে।জাগোনিউজ : সেই গৎবাঁধা ধনী-গরিবের প্রেমের গল্প?ওম : সময় বদলালেও অনেক কিছুই আগের মতোই রয়ে গেছে। আমাদের আবেগ-অনুভূতি সেই আগের মতোই আছে। আমাদের উপমহাদেশের ছবিগুলোতে ধনী-গরিবের প্রেমটাই টিকে গেছে। তবে গল্পে যথেষ্ট নতুনত্ব থাকবে সেইসাথে গানগুলো বেশ সুরেলা এবং নান্দনিক হবে।জাগোনিউজ : আপনাকে কলকাতার চেয়ে ঢাকার ছবিতেই বেশি কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। এজন্য অনেক কথাই শোনা যায়। ওপারে ফ্লপ বলে এপারে কাজ করছেন। আপনি কি বলবেন?ওম : দেখুন, বেঁচে থাকতে হলে আপনাকে যেমন প্রশংসা শুনতে হয় তেমনি সমালোচনাও সইতে হবে। ফ্লপ বা হিটের কিছু নেই। মানুষের ভাষা, আচার-ব্যবহার, প্রকৃতি সবকিছুর সাথেই এপার-ওপারের মিল রয়েছে। আমি ঢাকার ছবিতে প্রস্তাব পাচ্ছি তাই কাজ করছি। আগামীতেও এখানে আমি কাজ করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব। জাগোনিউজ : আপনার বিপরীতে নবাগতা জলি অভিনয় করবেন। ওর সাথে গ্রুমিং করেছেন আপনি। কী মনে হয়, দুজনের রসায়নটা জমবে তো?ওম : হ্যাঁ, জলির সাথে অলরেডি আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। ভারি মিষ্টি একটা মেয়ে। যতদূর জেনেছি চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য সে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তার সাথে কথা বলে মনে হয়েছে কাজের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস। এছাড়া গ্রুমিং-এও ভালো করেছে। আমারতো মনে হয় সে ভালো করবে ফিল্মে। আর ওর সাথে স্ক্রিন কেমিস্ট্রিটাও জমবে বলেই আমার বিশ্বাস। জাগোনিউজ : কোন ধরণের চরিত্রের প্রতি আপনার দুর্বলতা কাজ করে?ওম : আমি মনে করি একজন অভিনেতাকে সব চরিত্রের জন্যই দুর্বলতা রাখতে হয়। কখন কোন চরিত্রে অভিনয় করা লাগে সেটা আগ বাড়িয়ে বলা যায় না। আমি যে চরিত্রের জন্যই সুযোগ পাবো সেই চরিত্রেই নিজেকে মানিয়ে নিতে চাইব। তাছাড়া এখন অবধি যতগুলো ছবিতে কাজ করেছি প্রত্যেকটা ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে কাজ করেছি। নিজেকে সব চরিত্রেই সবল ভাবি।জাগোনিউজ : ঢাকায় নির্মিত ছবি এবং কলকাতার ছবিগুলোর মধ্যে কী পার্থক্য চোখে পড়ে?ওম : চলচ্চিত্রতো চলচ্চিত্রই! দুই বাংলার ভাষা ও জীবন যাত্রা এক। তবে যতটুকু পার্থক্য মনে হয়েছে সেটা হচ্ছে ওপার বাংলার নির্মাতারা তুলনামূলক বেশি দক্ষ এবং ওপারের ছবি নির্মাণ সামগ্রীগুলো আপগ্রেড বেশি। এছাড়া ইদানিং কলকাতার ছবি তৈরিতে বাজেটটাও বেড়েছে। যেটা হয়তো বাংলাদেশের ছবির তুলনায় একটু বেশি। এছাড়া আমি জানি যে এপারের ছবির বাজারে কিছুটা ক্রান্তিকাল চলছে, যেটা একসময় আমাদের ওপারেও ছিল। তবে সমস্যা যেখানে থাকবে সমাধানও তার রয়েছে। আমি মনে করি সকলের প্রচেষ্টায় এই সমস্যা একদিন আর থাকবে না। জাগোনিউজ : জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধানে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?ওম : উনি খুব ভালো একজন মানুষ! শিল্পীদের কাছ থেকে হাসিমুখে কিভাবে সেরা কাজটি আদায় করে নিতে হয় সেটা উনি খুব ভালো করে জানেন। এছাড়া অত্যন্ত অতিথি পরায়ণ একজন মানুষ আজিজ স্যার। বলতে গেলে তার হাত ধরেই আমি এদেশে প্রবেশ করেছি। তিনি আমাকে এ বাংলায় কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন এজন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।জাগোনিউজ : কলকাতায়ও ‘অগ্নি-২’ মুক্তি পেয়েছে। সেখানকার দর্শকদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পেয়েছেন?ওম : দুর্দান্ত রেসপন্স পেয়েছি। এ ছবির মাধ্যমেই তো দর্শকরা ওমকে নতুনভাবে চিনেছে। এছাড়া আমি খেয়াল করেছি ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সময় দর্শকরা ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে হলে গিয়ে দেখেছেন। এ এক অন্যরকম ভালোবাসা বুঝলেন তো!জাগোনিউজ : বাংলাদেশি চলচ্চিত্র দেখেন?ওম : অবশ্যই দেখি। আমার ওপারে যেমন প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী আছে তেমনি এপারেও আছেন। রাজ্জাক, আলমগীর, ফেরদৌস, রিয়াজ, শাকিব, ববিতা, শাবানা, শাবনূরসহ আরও অনেক তারকাদের অভিনয় আমার খুব প্রিয়। তাদের প্রত্যকের ছবি এবং অভিনয় আমার ভালো লাগে।জাগোনিউজ : কলকাতার কোন ছবিতে কাজ করছেন না?ওম : এ মুহুর্তে ৩-৪ ছবিতে কাজের ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে। খুব শিগগির সেগুলো নিয়ে ব্যস্ততা বাড়বে। জাগোনিউজ : এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। অভিনয়ের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার আসার গল্পটা জানতে চাই...ওম : প্রায় একযুগ হয়ে গেলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। সেই ১৭ বছর বয়স থেকে স্ট্রাগল শুরু করেছি। আমি টেলিভিশনে অনেক ননফিকশন শো হতো- সেখানে কাজ করেছি। এছাড়া নাটক, চলচ্চিত্রে জুনিয়র আর্টিষ্ট হয়েও অনেক কাজ করেছি। কিন্তু মনে ইচ্ছে ছিলো হিরো হবো। উপরওয়ালার বিশেষ সহানুভূতিতে সেই ইচ্ছে আমার পূরণ হয়েছে।জাগোনিউজ : আপনার পড়ালেখা ও পারিবারিক জীবন নিয়ে কিছু বলুন?ওম : ইন্দীরাগান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি। পরিবারে বাবা-মা দু’জনেই আছেন। আমরা দুই ভাই কিন্তু আমার কোনো বোন নেই। ভাইদের মধ্যে আমি ছোট। দাদা-বউদি আর ছোট ভাইপো নিয়ে আমাদের সুখের সংসার।জাগোনিউজ : আপনাকে ধন্যবাদওম : আপনাকেও ধন্যবাদ। সেইসাথে জাগোনিউজের পাঠকদের জানাই শুভেচ্ছা।এলএ/পিআর

Advertisement