‘ইউ নো, দিজ হোম কস্ট মোর দ্যান হান্ড্রেড মিলিয়ন ডলারস। আই উইশ, ইফ আই উড বাই অ্যানি ওয়ান!’ যার অর্থ হলো- ‘আপনি জানেন, এ বাড়ির (ইস্তাম্বুলের বসফোরাস ক্রুজ) মূল্য একশ মিলিয়ন ডলার। আমি যদি এখানে একটু জায়গা কিনে থাকতে পারতাম, তাহলে কতই না ভালো হতো!’
Advertisement
সন্ধ্যা তখন ঘনিয়ে আসছে। সাগরের নীলপানিতে শেষ বিকেলের রোদ পড়ে ঝিকমিক করছে। উজ্জ্বল আলো ছড়িয়ে পড়েছে সাগরের তীর ঘেঁষে পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা কয়েকশ বছরের পুরনো রাজপ্রাসাদের মহলের মতো বাড়িগুলোতে। এমনই এক মনোরম পরিবেশে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের বসফোরাসে (ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগকারী প্রণালি) ছোট্ট জাহাজে বসে মুচকি হেসে তার ভবিষ্যত ইচ্ছার কথা বলছিলেন তুরস্ক এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ইমরাহ কারকা।
তার কথা শুনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো আমি নিজেও তাকিয়ে দেখে উপলব্দি করলাম শতভাগ যথার্থ কথাই বলেছেন তিনি। সত্যিই এ যেন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি। সাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা শত বছরের পুরনো এ বাড়িগুলো দেখলে যে কারও মনে এ ধরনের সুপ্ত বাসনা জাগতেই পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যারাই ভ্রমণ করতে আসেন সাধারণত তারা কেউ বসফোরাসে শিপক্রুজে ভ্রমণ না করে ফেরেন না। নিজ চোখে না দেখলে লেখনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা যায় না এর সৌন্দর্য।
Advertisement
তুরস্ক এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে তিনদিনের (যাতায়াতসহ) মিডিয়া ট্যুরের দ্বিতীয় দিন বিকেলে বসফোরাস ক্রুজের আয়োজনে শেষ বিকেলে জাহাজে ঘুরে ঘুরে এক অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। শুধু আমরাই নয়; আমাদের মতো শত শত পর্যটক পৃথক জাহাজে করে ঘুরে ঘুরে দু’পাড়ের শত বছরের পুরনো বাড়িঘর, নীলপানি, পাহাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা প্রাসাদসম বাড়িগুলোতে জোনাকির মতো জ্বলজ্বলে বাতির সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম মনভোরে।
বেসরকারি একটি টেলিভিশনে প্রচারিত সুলতান সোলেমান সিরিজের বদৌলতে বসফোরাস প্রণালির নাম অনেকেরই আগে থেকেই জানা। বসফোরাসের তীরে একদা গড়ে উঠেছিল সুলতান সুলেমানের রাজপ্রাসাদ। এখনও রাজপ্রাসাদের তীরে দাঁড়িয়ে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
তুরস্ক এয়ারলাইন্সের আয়োজনে শিপক্রুজে বাংলাদেশ থেকে সফররত নয় সদস্যের আমরা মিডিয়াকর্মীরা ছোট্ট একটি জাহাজে করে শেষ বিকেলে ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়। জাহাজগুলোর একতলা ও দোতলায় সুন্দর বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এপ্রিল-মে মাসে চমৎকার আবহাওয়া থাকায় মৃদু হিমেল হাওয়ায় শরীর ও মন জুড়িয়ে যায়।
জাহাজটি বসফোরাস প্রণালির চারপাশ দিয়ে ঘুরতে থাকে। এরই মাঝে চলতে থাকে চা, কফি, জুস, স্যান্ডউইচসহ আপ্যায়ন। তবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর আগ পর্যন্ত চমক লুকানো ছিল। পশ্চিমাকাশে যখন সূর্য ডুবিডুবি ভাব তখন জাহাজে ডিনারের জন্য ডাইনিং টেবিল সাজানো হচ্ছিল। তুরস্কের বিখ্যাত কাবাব, সালাদসহ নানা মুখরোচক খাবারে রাতের খাবারের পর্ব চলতে থাকে। খেতে খেতে সকলেই অবাক বিস্ময়ে বসফোরাসের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। একপর্যায়ে জাহাজ তীরে ভিড়লে মনে হচ্ছিল আরও কিছুক্ষণ থাকলে কী ক্ষতি হতো!
Advertisement
এমইউ/এসআর/পিআর