দেশজুড়ে

ফণী মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় প্রস্তুত ১৩৭ আশ্রয়কেন্দ্র

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় সর্তকতা জারি করা হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে ১৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটিও বাতিল করে স্ব-স্ব কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় জেলা সার্কিট হাউসে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জানানো হয়, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ফণী ব্যাপক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এজন্য সর্তক থাকতে হবে। ইতোমধ্যে জেলায় ৪নং সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার জেলে-বাওয়ালীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

সভায় আরও জানানো হয়, জেলার ১৩৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার, শুকনা খাবার মজুদ রাখা, ওষুধের পর্যাপ্ততা নিশ্চিতকরণসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকবে। শনিবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার অফিসে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর ০৪৭১৬৩২৮১।

Advertisement

সভায় জানানো হয়, জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় ৩২শ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১১৬ টন চাল, ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা, ১১৭ বান টিন, গৃহ নির্মাণে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা ও ৪০ পিস শাড়ি মজুদ আছে।

১৫-২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশংকা করে সভায় বলা হয়, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর সর্তক সংকেত এলে উপকূলীয় মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে হবে। যতদূর সম্ভব দ্রুততার সঙ্গে মাঠের ফসল ঘরে তুলতে হবে। সংকেত প্রচারে ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।

সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি আবু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ প্রত্যক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তারা।

এদিকে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এটি এখন ভারতের ওড়িশায় অবস্থান করছে। এর ফলে বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে।

Advertisement

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম না করা পর্যন্ত সকল সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করে স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।

আকরামুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম