নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে বোরকা নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক সংগঠন শিবসেনা।
Advertisement
শ্রীলঙ্কা সরকার ইস্টার সানডেতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের জেরে দেশটিতে মুখ ঢাকা কোনো পোশাক পরা যাবে না বলে গত রোববার এক নির্দেশ জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপলা সিরিসেনা।
এরপরই এ দাবি নিয়ে সোচ্ছার হচ্ছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি শরিক ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল শিবসেনা।
দলীয় মুখপত্র ‘সামানা’ পত্রিকার সম্পাদকীয়তে মুম্বাইভিত্তিক শিবসেনা লিখেছে, শ্রীলঙ্কার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে তাদের শিবসেনার প্রশ্ন, 'রাবণের লঙ্কায় বোরকা নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন রামের অযোধ্যায় তা কবে নিষিদ্ধ হবে?
Advertisement
তারা উল্লেখ করেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেনে মুখ ঢাকা পোশাক পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাহলে ভারতে নয় কেন?
কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি মতে, ইসলামের সঙ্গে নারীদের বোরকা পরার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু আরবদের ঐতিহ্য অনুসরণ করেই মুসলিম নারীরা বোরকা পরেন। আর আরব নারীরা সূর্যের তাপ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বাইরে বের হওয়ার সময় বোরকা পরে শরীর ঢাকতেন।
শিবসেনা এমন দাবি তুললেও বিজেপির অপর শরিক আরপিআই-এর নেতা রামদাস আটওয়ালে বলেন, ভারতে বোরকা নিষিদ্ধ করা কখনোই উচিত হবে না। কেউ বোরকা পরলে সে জঙ্গি হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে যারা বোরকা পরে সন্ত্রাসে যুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দেয়া উচিত।
বিজেপি সাংসদ এবং মুখপাত্র জিভিএল নরসিংহ রাও বলেন, ‘ভারতে বোরকা নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন নেই।’
Advertisement
শিবসেনা মুখপত্র যদিও বোরকা নিষিদ্ধের প্রস্তাব করেছে, তারা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর ছাড়া তাদের দাবিরে পক্ষে আর কাউকেই পাশে পায়নি।
শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘তড়িঘড়ি বোরকা নিষেধাজ্ঞার কথা বলিনি। বোরকা ব্যবহার করে যারা মুসলিমদের বদনাম করে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে। আবার কোনো হিন্দু প্রথাও যদি সন্ত্রাসের প্রসারে সাহায্য করে, আমরা তারও বিরুদ্ধে।’
শিবসেনা নেতা নীলম গোরহে-ও বললেন, ‘দলীয় বৈঠকে বোরকা নিষিদ্ধের এমন প্রস্তাব পাশ হয়নি। মনে হয় দলীয় পত্রিকার সম্পাদকীয়তে কেউ ব্যক্তিগত মতামত লিখেছেন!’
এদিকে শিবসেনার এ দাবি প্রতিবাদ করেছেন ভারতের মুসলিম নেতারা। তারা শিবসেনার এ দাবিকে নাগরিক অধিকার আইনের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি ভারতের নারীদের বোরকা নিষিদ্ধের লোকসভার নির্বাচনের মধ্যে নতুন এক বিতর্ক উসকে দিয়েছে। দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলমান বসবাস করে।
এমএমএস/জেআইএম