ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের সময় বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে মিয়ানমারের তিন রোহিঙ্গা নাগরিক ও দুই পাচারকারীসহ পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
Advertisement
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের আটক করলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে বুধবার সকালে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানো হয়।
আটক তিন রোহিঙ্গা হলেন- ঢাকার কদমতলী থানার ধনিয়া এলাকার জামান খানের ছেলে পরিচয়দানকারী কায়েম খান (১৯)। তিনি প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। তার প্রকৃত নাম মফিদুল, বাবার নাম বাশার। তিনি কক্সবাজার হোয়াইকং ক্যাম্পে বসবাস করেন। অপর আটক মুন্সীগঞ্জের পূর্ব শিয়ালদি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে সারোয়ার ইসলাম (১৩) পরিচয়দানকারী সরোয়ার ইসলাম, তার বাবার নাম হামিদুল হক। সে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুবপালং রিফিউজি ক্যাম্পে বসবাস করে। অপরজন একই এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে পরিচয়দানকারী মরিজান বেগম (১৯)। তার বাবার নাম সালেহ। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার সফিউল্লাহ কাটা ক্যাম্পে বসবাস করেন। আটক তিন রোহিঙ্গাকে দালালচক্র মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে ভিসা নিয়ে ভারতে পাচার করছিল।
আটক পাচারকারী দুইজন হলেন- মুন্সীগঞ্জের পূর্ব শিয়ালদি মেম্বারবাড়ি গ্রামের হাদের আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও ঢাকার কদমতলী ধনিয়া এলাকার মোকলেছুর রহমানের ছেলে জামান খান (৫০)। এছাড়া পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে আটকরা হলেন- নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বারাইনগর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (২৪) ও একই এলাকার সোলায়মানের ছেলে মামুনুর রশিদ (২১)।
Advertisement
ইমিগ্রেশন পুলিশের এসআই খাইরুল ইসলাম জানান, আটক দুই পাচারকারী ওই তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে তাদের ছেলে-মেয়ে সাজিয়ে ভারতে পাচারের জন্য বেনাপোল ইমিগ্রেশনে নিয়ে আসেন। পরে তাদের পাসপোর্টের কাজ সম্পন্ন করার জন্য পাসপোর্ট ইমিগ্রেশনে জমা দেন। তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধরা পড়েন তারা। এ সময় তারা তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির কথা স্বীকার করেন। তারা ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে পাচার করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পাচারকারীসহ তাদের আটক করা হয়।
আটক দালালদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ইমিগ্রেশন পুলিশকে বলেন, ভারতে ভালো কাজ দেয়ার কথা বলে তাদের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে পাচার করছিলাম। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সুকৌশলে তাদের বের করে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রেখে পাসপোর্ট এবং ভিসা করার পর তাদের ভারতে নিয়ে যাচ্ছিলাম।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতি ও পাচার আইনে পৃথক মামলা করা হয়েছে। তাদের বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
জামাল হোসেন/আরএআর/জেআইএম
Advertisement