ভ্রমণ

‘এয়ারক্রাফটে ককপিটে চালকের আসনে যখন আমি’

‘ককপিটে পাইলটের আসনে বসে আছি। কৃষ্ণসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে বোয়িং ৭৮৭ এয়ারক্রাফট। ডানপাশে বসে ফার্স্ট অফিসার ককপিট প্যানেলের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বাটন চাপছেন।

Advertisement

আকাশ ঝলমলে, পরিষ্কার। মেঘ-বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই। হঠাৎ করেই ফার্স্ট অফিসারের চোখে-মুখে চিন্তার বলিরেখা। ঘন কালো অন্ধকারে ঢেকে গেছে সামনের গ্লাস। এ সময় বাম পাশে বসে মুচকি হেসে এয়ারক্রাফট নিরাপদে সরিয়ে নিলাম।

পাঠকরা হঠাৎ করে পাইলটের আসনে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে দেখতে পাবেন তা কখনও কল্পনাও করেননি। কিন্তু বাস্তবে মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তানবুলে ককপিটে পাইলটের আসনে বসে সত্যি সত্যি এয়ারক্রাফট চালানোর সুযোগ হয়ে যায়।

টার্কিশ এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক সফরকারী বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা মিডিয়া ট্যুর ২০১৯ এর সদস্য হিসেবে ইস্তানবুল টার্কিশ ফ্লাইট ট্রেনিং সেন্টারে উড়োজাহাজ চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ পান।

Advertisement

মিডিয়া ট্যুরের অংশ হিসেবে ট্রেনিং সেন্টার সরেজমিন পরিদর্শনে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। এ সময় ট্রেনিং সেন্টারের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ককপিটের আদলে এয়ারক্রাফট দেখাতে নিয়ে যান।

ওই কর্মকর্তা জানান, এখানে পাইলট ও কেবিন ক্রুরা দুই থেকে আড়াই মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসেন। একটি এয়ারক্রাফট বিরূপ আবহাওয়াসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে কিভাবে এয়ারক্রাফট নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় সে সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কোনো রুটে না চললেও কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে ফ্লাইটে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কখনও সাগর কখনও পাহাড় দেখিয়ে ওই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা যায় সে সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। শুধু তাই নয়, এমারজেন্সি ল্যান্ডিংয়ের সময় কেবিন ক্রুদের কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে হয়, ওই সময় যাত্রীদের ভীত না করে কিভাবে তাদের বাঁচানো যায় সে সম্পর্কেও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রতিদিন তিনটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। টার্কিশ ফ্লাইট ট্রেনিং সেন্টারে বর্তমানে চার হাজারের বেশি পাইলট কেবিন ক্রু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের পাইলট ও কেবিন ক্রুরা প্রতি ৯ মাস পর পর এ সেন্টারে এসে নতুন নতুন প্রযুক্তির সম্পর্কে বাস্তবসম্মত জ্ঞান অর্জন করে যান। এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করলে তাদের এয়ারক্রাফটে উঠতে দেয়া হয় না।

Advertisement

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে ট্রেনিং সেন্টারটিতে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য যন্ত্রপাতিসহ একাধিক ককপিট এবং ল্যান্ডিংয়ের সময় জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে কিভাবে যাত্রীরা নিরাপদে বের হবেন তা হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে। আকাশ ভ্রমণ নিরাপদ করতেই নিয়মিত এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

এমইউ/এনএফ/জেআইএম