খেলাধুলা

‘এই জার্সিটাকে পাকিস্তানের মনে করলে তাদের পাকিস্তানেই থাকা উচিৎ’

বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের জার্সি নিয়ে চলা তুমুল সমালোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সি পরিবর্তনের। আইসিসির কিছু বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। তবুও বিসিবির অনুরোধ তারা গ্রহণ করে জার্সি পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে।

Advertisement

তবে একদিন আগে উন্মোচন করা জার্সি নিয়ে সমালোচনা থেমে নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জার্সিকে অনেকেই পাকিস্তানের জার্সির সঙ্গে তুলনা করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙ লাল-সবুজের মিশেল নেই। জার্সিতে লাল অনুপস্থিত। সব মিলিয়ে সমালোচকদের আক্রমণের বড় পয়েন্টই ছিল, এটা একেবারেই পাকিস্তানের জার্সির মত।

আজ ধানমন্ডিতে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সার্জি নিয়ে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেখানেই তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, পাকিস্তানের মতো জার্সি হওয়ার কারণেই কি তাহলে দ্রুত সেটাকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কি না?

জবাবে বিসিবি সভাপতি অনেক কথাই বললেন। তবে একই সঙ্গে সমালোচকদেরও ছাড় দিলেন না। জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশের জার্সিতে তো বাংলাদেশই লেখা। সেখানে তো পাকিস্তান লেখা নেই। যাদের এমনটা মনে আসে, তারা যেন পাকিস্তানে গিয়ে থাকে।

Advertisement

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘যখন আপনারা আমাকে প্রশ্নটি মাঠে করেছিলেন তখন কিন্তু আমি জার্সিগুলো দেখতে চেয়েছি যে আসলেই কিছু আছে কি না। আমাকে দুটি প্রশ্ন করা হয়েছিলো, যার প্রথমটি ছিল আপনি দেখেছেন কি না? এরপর আমি বললাম যে না। এরপর দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল, ভালো লেগেছে কি না। আমি বলেছিলাম ভালোই তো। এটাই আমি বলেছিলাম আসলে। আমি তো তখনও দেখিনি। পরে দেখে আমার মনে হলো যে বাইরে কে কি বললো এটার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।’

তবুও নানা প্রশ্ন এবং সমালোচনার কারণে জার্সি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান পাপন। তিনি বলেন, ‘আমি বলছি আপনারা যখন প্রশ্ন করলেন, তখন আমার মনে হয়েছে কিছু হয়তো থাকতে পারে আপনাদের মাথায় যা আমাদের নজরে আসেনি। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, এটি এখন যেমন আছে এখান থেকেই লাল করা যায় কি না। তখন আমাকে দেখানো হলো যে আগে লাল ছিল। আইসিসির কারণেই এটি পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে করার পরে যে কোথাও লাল রঙ দিবো সেটি নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি।’

আইসিসির কথা জানিয়ে পাপন বলেন, ‘এখন সুযোগ আছে কিনা জিজ্ঞেস করার পরে ওরা বললো যে সুযোগ আছে। কালকে জানানোর পর আমরা বলেছি, যে ডিজাইন করতে। ওরা একটি ডিজাইন করে নিয়ে এসেছে, যেটি আমরা অনুমোদন করে দিয়েছি।’

বাংলাদেশের জার্সিকে পাকিস্তানের মনে করার কোনো সুযোগই নেই বলে মনে করেন পাপন। তিনি এ সময় জানিয়ে দেন, যারা জার্সি পছন্দ করবে না, তারা যেন পাকিস্তান চলে যায়। তিনি বলেন, ‘এখানে অন্য কোনো পাকিস্তানের পতাকার সাথে তুলনা করার অবকাশই নেই। আমি আপনাদের একটি কথাই বলছি শুধু যে বাংলাদেশ যেখানে লেখা আছে সেখানে পাকিস্তান কিভাবে মনে করবে। টাইগারের ছবি এবং বিসিবির লোগো যেখানে আছে। এরপরেও কেউ এটিকে বাংলাদেশ মনে না করে, পাকিস্তান মনে করে (তাহলে) ওর পাকিস্তানেই থাকা উচিৎ।’

Advertisement

সমালোচকদের কথা শুনে খুবই আশ্চর্য হলেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এটি তো আসলে আশ্চর্য কথা। তাহলে ধরুন আমি সবুজ ব্যবহার করবো না। হলুদ করলে কি আমরা অস্ট্রেলিয়া হয়ে যাবো? নীল করলে ভারত হয়ে যাবো? এগুলো আসলে বুঝতে পারছি না। আমি আজকেও অনেকগুলো জার্সি নিয়ে এসেছি, সবগুলোই এমন। এটাই পার্থক্য হচ্ছে যে, আমরা আসার পরে শুধু লালটি রেখেছি সবুজের সাথে। এবারই প্রথম লালটি মিসিং ছিল। তবে সেটি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি আমরা। সেটি না পারলে না পারতাম। কিন্তু যেহেতু সুযোগ আছে আমরা সেটি করছি। এটাই আপনাদের বললাম।’

আইএইচএস/এমএস