আইন-আদালত

পার্লামেন্টেও তো যাচ্ছেন, খালেদার আইনজীবীকে হাইকোর্ট

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের সাজা ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিলে জামিন ও নথি তলবের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আপনারা পার্লামেন্টেও তো যাচ্ছেন।’

Advertisement

বিএনপি তথা খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে উদ্দেশ করে এমন মন্তব্য করেন আদালত।

শুনানির একপর্যায়ে জয়নুল আবেদীন আদালতে বলছিলেন, দ্যাট ইজ দি ডিফারেন্টস কেইস মাইলর্ড। এইটা আপনারা বিবেচনা করেন।

জয়নুল বলেন, আমি আগেই বলেছি, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন; যেটি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। ফলে এটি খুবই ইমপর্টেন্ট।

Advertisement

এরপর হাইকোর্ট বলেন, আপনারা পার্লামেন্টেও তো যাচ্ছেন।

জয়নুল আবেদীন তখন বলেন, দ্যাট ইজ দ্য ডিফারেন্ট ইস্যু মাইলর্ড।

এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের সাজা ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, খালেদাকে ওই মামলায় বিচারিক আদালতে দেয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন আদালত। অর্থদণ্ড স্থগিত করে সম্পত্তি জব্দের আদেশে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন আদালত। এ ছাড়া জামিন চেয়ে খালেদার করা আবেদনটি নথিভুক্ত করেছেন আদালত। সঙ্গে সঙ্গে, বিচারিক আদালতে থাকা ওই মামলার নথিপত্র দুই মাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মুহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

হাইকোর্টে খালেদার আপিলের বিষয়ে শুনানির শুরুতেই অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের বলেন, মাই ফার্স্ট সাবমিশন ইজ অ্যাডমিট দিস অ্যাপিল ফর হিয়ারিং অ্যান্ড দেন উইল প্লেস আওয়ার বেইল পিটিশন। বিকজ দিস ইজ আ্যা কেস অব বেগম খালেদা জিয়া। দ্যাট ইজ হোয়াই দিস কেইস ইজ ভেরি ইমপোরট্যান্ট ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড আদার্স সাইট। মাই ফার্স্ট সাবমিশন ইজ কাইন্ডলি অ্যাডমিট দিজ অ্যাপিল অ্যান্ড দেন উইল প্লেস আওয়ার বেইল পিটিশন। আদালত তখন বলেন, আমরা অ্যাডমিট (গ্রহণ) করে নিচ্ছি। অর্থদণ্ড স্থগিত করে দিচ্ছি।

এ সময় জয়নুল আবেদীন, বিচারিক আদালতে সম্পত্তি জব্দ করার আদেশটি স্টে করুন। এটাতো সম্পত্তি স্টেটাস ক্যু (স্থিতাবস্থা) লাগবে। তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘ওকে স্টেটাস ক্যু (স্থিতাবস্থা)।’

তবে আদালত বলেন, ‘বেইল (জামিন) হবে না।’ জয়নুল আবেদীন বলেন, একটু শোনেন মাইলর্ড, না শুনলে আমরা (ডিটরাইট) ক্ষতিগ্রস্ত হব। আদালত বলেন, পারব না। শুনলে আদেশ দিতে হবে।

জয়নুল আবেদীন বলেন, হ্যা, শুনলে তো আদেশ দিবেনই। আমাদের তো বেইল পিটিশন করার একটা রাইট আছে। আদালত বলেন, আমরা তো বলছি পরে শুনব। রেকর্ড আসলে পরে শুনব।

জয়নুল আবেদীন বলেন, তাহলে রেকর্ড আসার জন্য একটা তারিখ নির্ধারণ করে দেন, তিনি তার মধ্যে আসুক। যদি তারিখ না দেন তাহলে.... আমাদের আবেদনকারী অসুস্থ, তার অবস্থা খুব ভালো না। আরেকটা কেসে উনার বেইল পেন্ডিং।

আদালত বলেন, ‘আমরা যদি উনাকে (খালেদা জিয়া) বেইল দেইও তাহলে উনি মুক্তি পাবেন না। যেহেতু আরেকটি মামলায় আটক আছেন, সেহেতু আমরা বেইল দিচ্ছি না।,

জয়নুল বলেন, আরেকটা না, আরও ১০টা কেসে উনি থাকতে পারেন। সবগুলো কিন্তু আপনি আমলে নেবেন না। অনেক জিনিস থাকতে পারে। কিন্তু আগেই যদি পিটিশনার সম্পর্কে বলে দেন তাহলে আমাদের জন্য সেটা.... প্লিজ মাইলর্ড একটা ডেট দিয়ে দেন।

আদালত বলেন, ‘আমরা যে সবসময় বেইল দেই না, তা না। কখনও কখনও দেই। রেকর্ডটা আসুক আমরা দেখব।’

জিয়া অরফানেজ মামলার রেকর্ডের কথা তুলে ধরে জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, এর আগে রেকর্ডটা আনার একটা ডেট দিয়েছিলেন। ডেট অনুযায়ী রেকর্ডে এসেছে এবং রেকর্ড আসার সঙ্গে সঙ্গেই বেইল দিয়েছিলেন।

হাইকোর্ট বলেন, ‘ওইটা পাঁচ বছরের সাজার রায়ের মামলায় দিয়েছিলাম। পরে সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছিল। আমরাও যে দেই না, তা না। এই বেইল দিলে কোনো লাভ হবে? উনি বের হতে পারবেন? জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, না।

হাইকোর্ট বলেন, ‘যেহেতু একটি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা উচ্চ আদালত ১০ বছর করেছিলেন, সেই মামলায় তারা বেইল দেননি, তাই আমরাও দিচ্ছি না।’

জয়নুল বলেন, আপনাদের তো বেইল দিতে বাধা নেই। লিগ্যাল কোনো গ্রাউন্ড নেই। আদালত বলেন, আগে রেকর্ড আসুক, আমরা দিয়ে দেব। জয়নুল বলেন, তাহলে এক সপ্তাহের একটা সময় দিয়ে দেন। আদালত বলেন, তিন মাস আগে রেকর্ড পাঠাতে পারবে না।

জয়নুল আবেদীন বলেন, আপনারা অর্ডার না করলে তো রেকর্ড আসবে না। এক সপ্তাহের মধ্যে আসার একটা আদেশ দেন। আগের কোর্ট দুই সপ্তাহের একটা আদেশ দিয়েছিলেন।

হাইকোর্ট বলেন, ‘এই মামলায় তো সেই আর্জেন্সি নেই।’ মোস্ট আর্জেন্ট মাইলর্ড, বলেন জয়নাল আবেদীন। হাইকোর্ট বলেন, প্লিজ শোনেন মিস্টার জয়নুল আবেদীন।

এফএইচ/জেডএ/এমকেএইচ