জাতীয়

মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার কথা উল্লেখ করে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের বলেছেন, ‘তোমরা মাথা ঠান্ডা রেখে খেলবে। কোনো প্রেসার নেবে না। আমাদের জয় আসবেই। দেখবে কোনো না কোনো একদিন আমরা বিশ্বকাপ জয় করব।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘অধৈর্য ও হতাশ না হয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে। একবার ছয় মারলে পরের বলটা আবার ছয় মারার আগে শান্ত থেকে সিদ্ধান্ত নেবে। বলের গতিবিধি বুঝে খেলবে। তাহলে কেউ তোমাদের হারাতে পারবে না।’

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও বিসিবির কর্মকর্তাসহ মোট ৬০ জন খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন খেলা দেখতে লন্ডনে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করলে, তিনি মৃদু হেসে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে এক পর্যায়ে পাপন বলেন, ‘মুশফিক (মুশফিকুর রহিম) বলেছে, এবার আমরা সবাইকে হারাতে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পেলে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার ফোন নম্বর তো তোমাদের অনেকের কাছে আছে। তোমরা আমাকে মেসেজ পাঠিও। এরপর ফোনে কথা বলা যাবে। আমি তো অনেকের সাথেই কথা বলি।’

খেলোয়াড়দের অনেকেই এবার বিশ্বকাপ উপলক্ষে শরীর কমানোর চেষ্টা করেছেন জানতে পেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একেবারে শুকিয়ে গেলে ফিট থাকবে তা তো না। শুকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেদের দুর্বল করে ফেল না।’

লন্ডনে বিশ্বকাপ হওয়ায় সেখানে বসবাসকারী অনেক বাঙালির সমর্থন পাওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।এছাড়া খেলার ফলাফল যাই হোক না কেন খেলোয়াড় সুলভ মনোভাব নিয়ে সেটা মেনে নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Advertisement

বিসিবি সভাপতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের কোনো চাপ দিও না। খেলার ফলাফলের পর ওদের কিন্তু কোনো বকাঝকা করবে না। খেলোয়াড় সুলভ মনোভাব নিয়ে ফলাফল মেনে নিতে হবে।’

পাপন বলেন, ‘খেলার সময়ই তো আপনি সব সময় এই নিয়ে ফোন করে বলে দেন। তাই আমরা ওদের কোনো ধরনের বকাঝকা করি না।’

এ সময় মাশরাফি বলেন, ‘একবার টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে এক রানে হেরে দলের সবাই মন খারাপ করে সারা রাত ঘরের বাইরে বসে ছিলাম।’

ক্রিকেটারদের মধ্যে এবার বিশ্বকাপের আগে পাঁচ-ছয়জন বিয়ে করেছেন বলে এক খেলোয়াড় বললে উপস্থিত সবাই হেসে ওঠেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে তোমরা এখানে নিজেদের পরিবার নিয়ে আসবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেটের মতো চ্যালেঞ্জিং খেলায় আত্মবিশ্বাসটা খুব বেশি প্রয়োজন। প্রতিটি ম্যাচের শেষ দিকে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়াতে হবে। তাহলে তোমরাই জিতবে।’

সাক্ষাৎ শেষে ক্রিকেটাররা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।

খেলোয়ারদের মধ্যে জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিথুন, মুশফিকুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদুল্লাহ, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আবু জায়েদ চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান, সাব্বির রহমান, ইয়াসির আলী চৌধুরী, নাঈম হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও ফরহাদ রেজা।

টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্য ও বিসিবির পরিচালকদের মধ্যে খালেদ মাহমুদ সুজন, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, মাহবুব উল আলম আহমেদ, সাজ্জাদুল আলম, এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মনজুর কাদের, এ জে এম নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ আকরাম খান, কাজী ইনাম আহমেদ, এস কে সোহেল, সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, আলমগীর খান, সাইফুল আলম চৌধুরী নাদেল, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, এনায়েত হোসেন সিরাজ, সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম, মোহাম্মদ জালাল ইউনুস, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, গাজী গোলাম মর্তুজা, মোহাম্মদ হানিফ ভূঁইয়া, নাজির আহমেদ তানজিল চৌধুরী, শওকত আজিজ রাসেল, নিজামউদ্দিন চৌধুরী, তৌহিদ মাহমুদ, মো. আলমগীর, কাওসার আজম, আলফ্রেড রতন গমেজসহ মোট ৬০ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

উল্লেখ্য, আগামীকাল বুধবার বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ৩০ মে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ৫ মে আয়ারল্যান্ডে শুরু হচ্ছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। যেখানে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ছাড়াও থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ।

এফএইচএস/এমআরএম/এমএসএইচ/পিআর