‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে’- গ্রাম্য এ প্রবাদের মতো তুরস্কে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়ার পরও যেমন ফজরের আজান শুনে ঘুম ভাঙল, তেমনি সকালে উঠে নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণের অভ্যাসের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে ফজরের নামাজ পড়েই ইসফানবুল হলিডে হোটেলের সামনের লবির লম্বা করিডোরে হাঁটতে বেরিয়ে পড়লাম। ইস্তাম্বুলে সকাল পৌনে ৬টা হলেও বাংলাদেশে তখন সকাল ৯টা।
Advertisement
গতকালের (২৯ এপ্রিল) নয় ঘণ্টার লম্বা জার্নির পর হোটেলটা ভালো করে দেখা হয়নি। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে কয়েকটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ দেখে মনটাই খারাপ হলো।
হোটেল লবির সামনে পরিকল্পিভাবে তৈরি করা ফুলের বাগানে কিছুটা জায়গার ব্যবধানে অগ্নিনির্বাপক ফায়ার হাইড্রেন্ট সুবিধা। এটা দেখে মাথায় প্রশ্ন জাগল- পানি কোথা থেকে নেয়? খুব ভালোভাবে চক্ষু চালাচালি করে খুঁজে পেলাম পানির ট্যাংকির সন্ধান। যুদ্ধের ময়দানে যেমন বাঙ্কার বানানো হয় ঠিক তেমনি করে ফায়ার হাইড্রেন্টের পাশে সুন্দর সবুজ ঘাসের গালিচা তৈরি করে ট্যাংকিগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পিতভাবে একই স্থানে আবাসিক হোটেল, শপিংমল ও বিনোদন পার্কের কোথাও আগুন লাগলে তা দ্রুত নেভাতে এ ব্যবস্থা। এহেন সতর্কতা দেখে নিজের দেশের জন্য মনটা খারাপ হলো।
Advertisement
গত ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর স্পট কভারেজে গিয়ে দেখেছিলাম পানির সরবরাহের ঘাটতির কারণে ফায়ারম্যানরা অগুন নেভাতে পারছিলেন না। একই ঘটনা ঘটে বনানীর এফআর টাওয়ারের ক্ষেত্রেও।
হোটেল থেকে বেরিয়ে মাথা তুলে তাকাতেই দেখতে পেলাম ছাদের ওপর হেলিকপ্টার। খুব বড় জোর পাঁচ-ছয় তলা ওপর থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার ও হেলিপ্যাডের সুব্যবস্থা। সতর্কতা আর কাকে বলে! হোটেলটির অবস্থান পাহাড়ের ওপর হওয়ায় নিচে যাতায়াতের জন্য এসকেলেটরের সিঁড়ি তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এসব দেখে সাতসকালে মনটা খারাপ করে ভাবলাম- কবে আমার দেশে এমন দৃশ্য দেখব।
এমইউ/এমবিআর/জেআইএম
Advertisement