ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ হতে বিনাজুড়ি পর্যন্ত ১১শ’ মিটার সড়কের কোন মালিক নেই। সড়কটির দুরাবস্থার কারণে চলাচলকারী জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এ সড়কটি নেই এলজিইডি’র নিয়ন্ত্রণে, আবার নেই সড়ক ও জনপদ ‘সওজ’র নিয়ন্ত্রণে। তাই প্রতিবছর ঝড়-বৃষ্টি-বন্যায় বার বার নষ্ট হওয়া সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৮টি ইউনিয়নের লক্ষ লক্ষ মানুষকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাজিরহাট ঝংকার মোড় থেকে মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ পর্যন্ত সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের। মাইজভাণ্ডার হইতে বিনাজুড়ি পর্যন্ত ১১শ’ মিটার বাদে গহিরা-হেয়াকো সড়কটিও একই বিভাগের নিয়ন্ত্রণে। মাঝখানে ১১শ’ মিটার সড়ক এক সময় এলজিইডি ও সওজ এর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় স্থানীয় এমপি’র বিশেষ (থোক) বরাদ্দ দিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হতো। তখন জনপ্রতিনিধিও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এটিকে ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে। বিগত জোট সরকারের সময় এটি এলজিইডি’র তালিকাভুক্ত হয়। এরপর তারা এটির উন্নয়ন কাজ করে একবার। মাত্র ১১শ’ মিটার সড়ক, দুই পাশে ‘সওজ’ এর সড়ক নিয়ে বিপাকে পড়েন এলজিইডি। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের বিগত সময় এটিকে সওজ’র কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সকল আনুষ্ঠনিকতা সম্পন্ন করে এটি পাঠানো হয় সওজ’র কাছে। তারা এ সড়কটিকে এখনো নীতিগত ভাবে গ্রহণ করেনি। ফলে পুনরায় ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’ হিসেবে পরিত্যক্ত রয়েছে সড়কটি। প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক আবু জাফর রেহমান বলেন, সড়কটিতে শুষ্ক মৌসুমে ধুলা বালি আর বর্ষা মৌসুমে কাদা পানির বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। কচি-কাঁচা শিক্ষার্থীদের ও মাইজভান্ডারের ভক্তদের প্রায় সময় জামা-কাপড় নষ্ট হয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবহেলিত থাকা খুবই কষ্টের। নানুপুর ইউপি সদস্য শফিউল আলম জানান, সড়কটি প্রতিবছর ঝড়-বৃষ্টি-বন্যায় ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে। দক্ষিণ ফটিকছড়ির আট ইউনিয়নের মানুষ ও মাইজভাণ্ডার রের লক্ষ লক্ষ ভক্ত প্রতিদিন এটি ব্যবহার করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ইউপি সদস্য আমান উল্লাহ জানান, সড়কটিতে মাঝে মাঝে ইট-বালি দিয়ে সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করলেও তা বেশীদিন থাকেনা। এবছর তিনদফা বন্যায় নয়া বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বিনাজুড়ি খালের সাথে বিশাল ভাঙ্গণের সৃষ্টি হয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলার প্রকৌশলী মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, মাইজভাণ্ডার বিনাজুড়ি সড়কটি যতক্ষণ সড়ক ও জনপদ বিভাগ গ্রহণ না করে ততক্ষণ আমাদের (এলজিইডি) দেখভাল করতে হচ্ছে। এটি সংস্কারের জন্য ৩৬ লক্ষ টাকার একটি প্রজেক্ট তৈরি করে দফতরে পাঠানো হয়েছে। ফটিকছড়ির সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি বলেন, মাইজভাণ্ডার-বিনাজুড়ি সড়কটিকে একসময় ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে থোক বরাদ্দ দিয়ে সংস্কার করতাম। এবছর তিন দফা বন্যায় এটির অবস্থা খুব নাজুক হয়ে পড়ায় গত ৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর জরুরি ভিত্তিতে ১১শ’ মিটার সড়কটি সংস্কারের জন্য চিঠি দিয়েছি। এসএইচএস/পিআর
Advertisement