জাতীয়

৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

এ বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে গেল। গরম আরও বেড়ে দুঃসহ করে তুলতে পারে জনজীবন কারণ আগামী দু’দিনেও স্বস্তির বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই।

Advertisement

তবে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উপকূলের কাছাকাছি আসলে এর প্রভাবে মেঘ-বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তার জন্য আরও ৩-৫ দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।

আজ (সোমবার) বৈশাখের ১৬ তারিখ। ইতোমধ্যে টানা তাপপ্রবাহের কারণে গরমে কষ্ট পাচ্ছে সারাদেশের মানুষ। মাঠে-ঘাটে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষের কষ্টটা সবচেয়ে বেশি। গরমের জন্য অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারছেন না। ফ্যানের বাতাসও স্বস্তি দিতে পারছে না।

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Advertisement

সোমবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি, একদিন আগে যা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ছাড়া দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। এ সময়ে সেখানে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

Advertisement

সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল

অন্যদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১২) জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৩০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৪৬০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৪৮০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ৪৫০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।

২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হল, দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমথ্যে বিপদে পড়তে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ৩০ এপ্রিল ও ১ মে প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম (প্রবল ঘূর্ণিঝড়)’ ও ১৭৫ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ‘ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম (অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়)’ এ পরিণত হবে। আগামী ২ ও ৩ মে ঘূর্ণিঝড়টি সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম (তীব্র প্রবল ঘূর্ণিঝড়)’ এ রূপ নিতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।

তবে বর্তমান গতিপথ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টির বাংলাদেশের উপকূলে সরাসরি আঘাত হানার কোন আশঙ্কা আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।

আরএমএম/জেএইচ/জেআইএম