ভারত, অস্ট্রেলিয়া, স্বাগতিক ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ব্যাট করলে ৩০০ করবে, সেটা ধরে নিয়েই মাঠে নামতে হবে। আবার নিজেরা আগে ব্যাটিংয়ে নামলেও ৩০০’র নিচে করা যাবে না। তাহলে বোলাররা লড়িয়ে পুজি পাবেন না।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে এমন আভাস তিনি দিয়েছেন। এর বাইরে নিজ দলের বোলিং সামর্থ্য নিয়ে কি বললেন মাশরাফি? পেস ও স্পিন বোলিং সম্পর্কে তার ধারণা কি? এই বোলিং নিয়ে বড় দলগুলোর সঙ্গে বড় মঞ্চে কি কুলিয়ে ওঠা সম্ভব?
এসব কৌতুহলী প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। আজ সংবাদ সম্মেলনেও এমন প্রশ্ন উঠলো। আসুন জেনে নেই নিজ দলে পেস ও স্পিন বোলিং নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফির ধারণা বা মূল্যায়ন কি?
অনেক কথার ভীড়ে মাশরাফি শুরুতেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন, যে ধরনের উইকেটে খেলা হবে, সেখানে সামর্থ্য যেমনই থাকুক না কেন, তার সর্বোত্তম প্রয়োগ প্রথম ও শেষ কথা। আর তার অনুভব, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেললেও বাংলাদেশের বোলিংটা সে অর্থে ভাল হয়নি। বিশেষ করে পেসাররা তেমন কার্যকর অবদান রাখতে পারেননি।
Advertisement
সে কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিম পারফরম্যান্স তেমন উজ্জ্বল ও ভাল হয়নি। মাশরাফি আসলে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের বোলিংটা চান। তার উপলব্ধি হলো, চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে উইকেট যেমন ছিল- এবারো হয়ত তেমনই থাকবে। যেহেতু ২০১৫ সালে পেস বোলিংটা ভাল হয়েছিল, তাই এবারো ভাল করা সম্ভব এবং ভাল করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শেষবার আমরা বিশ্বকাপ খেলেছিলাম অস্ট্রেলিয়ায়। একদম সিমিলার কন্ডিশন মানে উইকেটও ছিল ফ্ল্যাট। তাদের চাওয়া ছিল ওরকমই। ওর ভেতরেও ওখানে (অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে) পেসাররা ভালো করেছিল। আমাদের এখানেও (ইংল্যান্ডে) ভালো করার সামর্থ্য আছে। আমি নিশ্চিত ওখানে যেকোনো দলের পেস বোলাররা যদি ভালো করে তাহলে দল হিসেবেও ভালো করার সুযোগ বেশি থাকবে।’
মাশরাফির ধারণা, উইকেটে বোলারদের জন্য তেমন সহায়ক উপাদান থাকবে না। তারপরও যদি পেসাররা ভাল করেন, তারা শুরুতে ব্রেকথ্রু আদায় করে নিতে পারলে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
তাই মাশরাফির মুখে এমন কথা, ‘মনে হয় না ওখানে (ইংল্যান্ডে) বোলারদের তেমন হেল্প থাকবে, পেসারদেরও না। স্পিনারদেরও হেল্প ততটা থাকবে না। তবে আমরা যারা পেস বোলার আছি, যদি শুরুটা ভালো করি, ভালো বোলিং করি তাহলে আমাদের জয়ের সুযোগ বেশি থাকবে। আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বোলাররা ভালো করিনি বলে দলগত পরফরম্যান্স সেভাবে ভালো হয়নি। অবশ্যই আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিলাম কিন্তু ইন অ্যান্ড আউট আমরা চার ম্যাচে পেস বোলিং ভালো করিনি ইংল্যান্ডে। ওটা আমাদের মাথায় আছে। আমরা পেস বোলিং ইউনিট সম্মিলিতভাবে কতোটা ভালো করতে পারি। নির্দিষ্ট করে একজনকে না বলে পুরো পেস ইউনিটকে ভালো করতে হবে।’
Advertisement
স্পিনারদের প্রসঙ্গ উঠতেই মাশরাফির কণ্ঠে রিস্ট স্পিনারের অভাববোধ। এই বোলিং নিয়ে প্রতিপক্ষকে ৩০০’র নীচে আটকে রাখার সামর্থ্য আছে কিনা?- তার উত্তরে মাশরাফির জবাব, ‘অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ইংল্যান্ডের যে বোলিং অ্যাটাক- সেই বোলিংয়ের বিপক্ষেও ৩৫০ রান নিচ্ছে আবার সেটা আবার তারা চেজও করে ফেলছে। এমন না যে তারা ব্যাটিংয়ে চেজ করতে পারছে না। তিনশ’র আগে আটকাতে পারার অ্যাবিলিটি আমাদের আছে।’
তারপরও বাড়তি গতির বোলারের অভাববোধ রয়েই গেছে। সেটা অকপটে স্বীকারে এতটুকু দ্বিধা নেই মাশরাফির, ‘হ্যাঁ এক্সট্রা পেস যেটা দরকার সেটা নেই।’
তবে বাংলাদেশ অধিনায়কের ধারণা, শুধু বাড়তি গতিই সব নয়। সব সময় গতি ম্যাটার করে না। বৈচিত্র দরকার। যদি বৈচিত্র থাকে এবং জায়গামত তার প্রয়োগ ঘটানো যায়, তাহলে সাফল্য ধরা দিবেই।
বোলিং নিয়ে মাশরাফির শেষ কথা হলো, ‘সামর্থ্যে সঠিক ও যথার্থ প্রয়োগ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং করা খুব জরুরী। ওভারঅল আমাদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। যেহেতু আমাদের এক্সট্রা রিস্ট স্পিনার নেই, এখানে আমাদের অভাব আছে। তবে সাকিব ওয়ার্ল্ড ক্লাস। মিরাজ খুব ভালো করছে। মোস্তাফিজ, রুবেল, সাইফউদ্দিন, আমি আছি। ইউনিট হিসেবে আমরা খারাপ না যে আমরা ওই চাপ হ্যান্ডেল করতে পারব না। কিন্তু কোনো-কোনো ম্যাচে আপস ডাউন যাবে। সেখান থেকে কামব্যাক করা জরুরী। সামর্থ্য সম্পর্কে আমরা জানি। আমাদের সামর্থ্য সেরা ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।’
এআরবি/এসএএস/এমএস