বাংলা নববর্ষকে নতুন স্বপ্ন, উদ্যম ও প্রত্যাশার আলোয় রাঙাতে বরণ করে নিল লেবাননের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
Advertisement
গতকাল রোববার দিনব্যাপী আয়োজন করা হয়েছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলার। মেলায় ছিল নানা পদের মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি রকমারি পণ্যের স্টল, যা চোখে পড়ার মতো। দূর-দূরান্ত থেকে শতশত প্রবাসী রঙ-বেরঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ পরে ছুটে আসেন বৈশাখী মেলা উপভোগ করার জন্য।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের জিব্রান অ্যান্ড্রাউস টুয়েনি পাবলিক হাইস্কুলে ওইদিন বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আবহমান বাংলার অসাম্প্রদায়িক চেতনার সর্বজনীন উৎসব বাংলা বর্ষবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ) পালিত হলেও দূতাবাসের কর্মব্যস্ততার কারণে ২৮ এপ্রিল লেবাননে উদযাপন করা হয়।
Advertisement
দূতাবাসের আয়োজনে এ মেলায় প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। মনে হয়েছিল প্রবাসে যেন এক চিলতে বাংলাদেশ। প্রবাসীদের অংশগ্রহণে মেলা আর মেলাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, হয়ে ওঠেছিল মহামিলন মেলায়।
প্রবাসে বাংলাদেশ কমিউনিটি বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো নানাভাবে পালন করে থাকে। এর মধ্যে বৈশাখী মেলার ভিন্নতা রয়েছে। এ মেলায় দল-মত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করে থাকে। এ একটি মাত্র আয়োজনেই সবাই একাকার হয়ে যায়। ভুলে যায় তাদের দলীয় মতামতের ভিন্নতা।
বাংলাদেশ ও লেবাননের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদযাপনের এ উৎসবে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, লেবাননে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, লেবানন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈরুত দূতাবাসের শ্রম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ আগত অতিথিদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে আনন্দ সহকারে অনুষ্ঠান উপভোগ করার আহ্বান জানান।
Advertisement
সূচনা সংগীত হিসেবে শুরুতেই বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা ‘এসো, হে বৈশাখ, এসো, এসো’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন, যা উৎসবের আমেজকে প্রাণবন্ত করে তোলে। পরে বাংলাদেশ থেকে আগত প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী আগুন, অনিমা গোমেজ ও কৃতিসহ ১০ সদস্যের একটি সাংস্কৃতিক দল নাচ ও গান পরিবেশন করে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল, লেবাননের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ‘তারা মালুফ’ বাংলা ভাষায় তিনটি গান পরিবেশন করে হল ভর্তি দর্শক শ্রোতাদের ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। বৈরুত দূতাবাসের পাশাপাশি অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিকবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রবাসীদের বিনোদনের জন্য কুইজ প্রতিযোতিার আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেবানন শাখা। কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রদূত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের দূতাবাস থেকে দেশীয় খাবার পরিবেশন করা হয়।
জেডএ/এমকেএইচ