মার্ভেল কমিকস ফ্যানদের জন্য বহুল প্রতিক্ষীত ছবি ছিলো ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বশেষ ছবি ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেম’ ছবিটি। মুক্তির আগে থেকেই ছবিটি নিয়ে জল্পনা কল্পনার অন্ত ছিলো না।
Advertisement
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিনেমা হলগুলোতে অগ্রিম টিকিট বিক্রির হুলস্থুল পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত ২৬ এপ্রিল বিশ্বব্যাপি মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। অবিশ্বাস্য আয়ের রেকর্ড করে ফেলেছে মাত্র দুদিনেই।
ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৬৪৪ মিলিয়ন ডলার! গুগল বলছে বাংলাদেশি টাকায় সংখ্যাটি ৫৩,৯৮৯,৪১৮,০০০ (৫ হাজার ৩ শত ৯৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৮ হাজার) টাকা! মাত্র দুইদিনেই এই আয় জানান দিচ্ছে বেশ বড় আয়ের পথে হাঁটছে সুপারহিরোদের প্রতিহিংসার গল্পের ছবিটি।
‘অ্যাভেঞ্জার্স’র ছবি ‘ইনফিনিটি ওয়ার’র প্রথম সপ্তাহের আয় ছিলো ৬৪১ মিলিয়ন ডলার। সে তুলনায় সপ্তাহের প্রথম দুই দিনেই এন্ডগেমের আয় ছাড়িয়ে গিয়েছে ইনফিনিটি ওয়ারের আয়ের পরিসংখ্যানকেও।
Advertisement
ছবিটি আমেরিকায় এখন পর্যন্ত আয় করেছে ১৫৬ মিলিয়ন ও বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৪৮৮ মিলিয়ন ডলার। ছবিটি শুধু মাত্র চীনেই ব্যবসা করেছে ২৭০ মিলিয়ন ডলারের। মুক্তির প্রথম সপ্তাহে এমন অংকের কাছাকাছি আয় করেছিলো কেবল ‘ইনফিনিটি ওয়ার’ ও ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য ফ্যাট অব দ্য ফিউরিয়াস’ ছবিটি।
মজার একটি ব্যাপার হলো ‘অ্যাভেঞ্জার্স’র দুই দিনের আয় দিয়ে বাংলাদেশে ২ হাজারেরও বেশি সিনেমা নির্মাণ সম্ভব। হুট হাট কিছু সিনেমা ৩ কোটি বাজেটের বেশি হলেও সাধারণত ১ থেকে ৩ কোটি টাকার মধ্যেই সিনেমা নির্মাণ করা হয় ঢালিউডে। সরকারি অনুদান হিসেবে অবশ্য ১ কোটি টাকাও পাওয়া যায় না!
তবে ব্যক্তিগত প্রযোজনায় গড়ে দুই কোটি ধরা যেতে পারে বছর জুড়ে প্রতি সিনেমার বাজেট। সেদিক থেকে ৫ হাজার কোটি টাকায় আড়াই হাজার সিনেমা বানানো যাবে। অ্যাভেঞ্জার্সের আয় ৫ হাজার ৩ শত ৯৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। যা দিয়ে প্রায় বর্তমান বাজারে তিন হাজার সিনেমাই বানানো যাবে।
হলিউডি ছবির আয়ের সঙ্গে বাংলা সিনেমার বাজেটের এই তুলনাটি বিশেষ একটি মূল্যায়ণের। যেখানে ডিজিটাল চলচ্চিত্রের স্লোগান দিয়ে পথচলা ঢাকাই সিনেমার বৈশ্বিক অবস্থান খুবই নাজুক।
Advertisement
দুনিয়ার নানা দেশে চলচ্চিত্রকে জাতীয় আয়ের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে মূল্যায়ণ করা হয়। হলিউড ও বলিউড তাদের অন্যতম। সেখানে সিনেমার জন্য উর্বর ভূমি তৈরা করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতায়। কিন্তু দিন দিন সংশ্লিষ্ট মানুষদের অবহেলা, প্রতিহিংসার রাজনীতি ও নানা সংকটে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশের সিনেমা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছে।
অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই ইন্ডাস্ট্রিতে নজর দিলেই অনেক সাফল্য ধরা দিতে পারতো। অন্তত ঢাকাই সিনেমার অতীতের সোনালি ইতিহাস সে কথাই বলে। আরএএইচ/এলএ/পিআর