আন্তর্জাতিক

‘আমরা ভাবিনি এই লোকটা আমাদের মারতে এসেছে’

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে আত্মঘাতী হামলাকারীরা কিভাবে বেশ কয়েকটি হোটেল ও গির্জাতে হামলা চালিয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে। আটটি জায়গায় প্রায় একই সময়ে চালানো এসব হামলায় আড়াইশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো পাঁচশ’ জন।

Advertisement

রোববারের হামলার পর গত এক সপ্তাহে সিসিটিভির কয়েকটিও ভিডিও ফুটেজও প্রকাশিত হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন সন্দেহভাজন হামলাকারী তার পিঠে একটি বড় রুকস্যাক নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে কিভাবে নিগোম্বো শহরের একটা গির্জার ভেতরে গিয়ে ঢুকেছে।

জনাকীর্ণ সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জায় তখন ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলছিল। হেঁটে আসার সময় তাকে গির্জার বাইরে এক জায়গা কিছুক্ষণ থেমে একটি শিশুকে হাত দিয়ে আদর করতেও দেখা যায়। তারপর গির্জার বারান্দা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সে গির্জার ভেতরে ঢুকে মোটামুটি সামনের একটি আসনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। ওই গির্জায় নিহত হয় একশোরও বেশি মানুষ।

আরও পড়ুন : বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হামলার হুঁশিয়ারি দিল আইএস

Advertisement

এখন আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আরো একজন হামলাকারী রাজধানী কলম্বোর একটি হোটেলে কিভাবে হামলা চালিয়েছিল। সেখানে দেখা যায় যে হোটেলের যেখানে লোকজন সকালের নাস্তা খাচ্ছে সেরকম একটি জায়গায় একটি টেবিলের আশেপাশে সে ঘোরাঘুরি করছে। তার পিঠেও ছিল একটি রুকস্যাক জাতীয় ব্যাগ।

হোটেলের ম্যানেজারও ওই তরুণের বিষয়ে বিবিসির সাথে কথা বলেছেন। সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলের ম্যানেজার রোহান কর বিবিসিকে বলেছেন, সন্দেহভাজন ওই বোমারু তাদের হোটেলে চেক-ইন করেছিলো হামলার আগের দিন অর্থাৎ শনিবার সন্ধ্যায়।

সে যখন হোটেল আসে - তখন তাকে এক গ্লাস পানীয় দিয়েও স্বাগত জানানো হয়েছিল বলে তিনি জানান। সেটা পান করে সে তার রুমে চলে গিয়েছিল। হামলার দিন সকালে সে নিচে নেমে আসে। তার পিঠে একটা ব্যাগ ছিল।

আরও পড়ুন : জোর করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেয়ার পর সৌদিতে ৩৭ বন্দির শিরশ্ছেদ!

Advertisement

হোটেলের ম্যানেজার বলেন, তারপর সে হোটেলের রেস্টুরেন্টে চলে যায় যেখানে লোকজন সকালের নাস্তা করছিল। যাতে একেবারে মাঝখানের একটি টেবিলে বসতে পারে সেটাও সে নিশ্চিত করার চেষ্টা করছিল। রোহান কর আরো জানান যে সেসময় সে তার পিঠে রুকসাক নিয়ে ঘুরঘুর করছিল। তার আশপাশের প্রায় সবকটি টেবিলেই লোকজনকে তখন সকালের নাস্তা করতে দেখা যায়।

‘আমরা কখনও ভাবিনি এই সেই লোক যে আমাদেরকে মারতে এসেছে। সে টেবিলে বসলো, খাওয়াদাওয়া করলো। লোকজন বুফেতে আসার জন্যে সে অপেক্ষা করছিল। যখন সে দেখলো রেস্তোরাঁটি লোকজনে ভরে গেছে তখনই সে বিস্ফোরণ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে সে যতবেশি সম্ভব লোকজনকে হতাহত করতে পারে’- বলেন ম্যানেজার রোহান কর।

আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট দাবি করেছে, তাদের যোদ্ধারা এই হামলা চালিয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কার সরকার এজন্যে স্থানীয় স্বল্প পরিচিত একটি গ্রুপ ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত বা এনটিজে-কে দায়ী করে বলেছে, এদের সাথে আইএসও জড়িত থাকতে পারে। এসআইএস/এমকেএইচ