জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ- স্লোগানে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চের ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থীরা। শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের হোটেল একাত্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ মঞ্চের ঘোষণা দেন।
Advertisement
‘স্বাধীন সত্তার বিকাশে অধিকার ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি’ শিরোনামে ছয় পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মঞ্চের সমন্বয়ক জামায়াতে ইসলামীর নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জু।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জাতীয় মুক্তি ও জন আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উজ্জীবিত একদল আশাবাদী মানুষের উদ্যোগ এটি। এর মাধ্যমে নিজেদের ভাবনা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হবে।
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে মজিবুর রহমান বলেন, জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। এটি একেবারেই প্রাথমিক প্ল্যাটফর্ম। খুব শিগগিরই বৃহৎ আকারে যাত্রা শুরু করবে।
Advertisement
এটি জামায়াতের বিকল্প কোনো দল কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এটি একেবারেই স্বতন্ত্র একটি দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আমরা সব দলের লোকদেরই এখানে আমন্ত্রণ জানাবো।
জামায়াতের সংস্কার ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মজিবুর রহমান বলেন, আমি যেহেতু সেই দলে নেই, তাই সংস্কারের দায়িত্ব আমার ওপর পড়ে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাওলানা আবদুল কাদের, ব্যবসায়ী নজমুল হুদা অপু, সাবেক বিমান বাহিনী কমকর্তা সালাহ উদ্দিন, জুবায়ের হোসেন, যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. কামাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মোস্তফা নূর, গোলাম ফারুক, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এহসান জুবায়ের প্রমুখ।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আমি কখনোই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমি পেশাদার আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছি মাত্র। জামায়াতের বর্তমান বা সাবেক নেতার কাতারে আমাকে ফেলবেন না।
Advertisement
তিনি বলেন, আমি এই স্বাধীন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মঞ্চের সঙ্গে একমত। এ মঞ্চ আদর্শ নয়, অধিকার নিয়ে কাজ করবে। সুতরাং এখানে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ, জাতিগোষ্ঠী, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলেই অংশ নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামী থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জু একসময় ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং পরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ছিলেন। দলের সংস্কার ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া নিয়ে জামায়াতে মতানৈক্যের রেশ ধরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দল থেকে পদত্যাগ করেন প্রভাবশালী নেতা আবদুর রাজ্জাক। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ সহকারী সেক্রেটারি ছিলেন। এরপরই মজিবুর রহমান মঞ্জুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কার হওয়ার পর সংস্কারপন্থীদের সংগঠিত করে জামায়াতের বিকল্প একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানোর চেষ্টা করে আসছিলেন মজিবুর। তিনি নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ গঠনের কাজ শুরু করলেও আবদুর রাজ্জাক এ ধরনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত না থাকার কথা বলেছেন।
এ চেষ্টার প্রাথমিক পর্যায়ে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের স্মরণে গত ২ মার্চ ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক শোকসভা আয়োজন করেন তিনি। ওই শোকসভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এমএসএইচ/এমএস