সকল না পাওয়ার বেদনাকে ধুয়ে মুছে, প্রকৃতিকে অগ্নিস্নানে সূচি করে তুলতেই আসে বৈশাখ, আসে বাংলা নববর্ষ। আর এই বর্ষবরণের উৎসব আয়োজন এখন শুধু বাংলাদেশ কিংবা পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবব্ধ নেই। এই উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে, প্রবাসের শহরে শহরে। নতুন স্বপ্ন, নতুন উদ্যম ও প্রত্যাশার আলোয় রাঙানো বাংলা বছরকে বরণ করে নিলো মালয়েশিয়া প্রবাসীরাও।
Advertisement
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ ফোরাম অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। ২০ এপ্রিল মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের ক্রাফ্ট কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ফখরুল ইসলাম শুভ, মালয়েশিয়া ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচারাল মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি তান, মালয়েশিয়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সিইও আনোয়ার আবরার।
এছাড়াও হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. হেদায়েতুল ইসলাম, প্রথম সচিব (কন্স্যুলার) মো. মাসুদ হোসাইন, অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ডা. শংকর পোদ্দার, মো. আব্দুল আউয়াল রাজন, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন কলেজ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর আবুল বাসার। তিনি বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য গৌরবে গাঁথা পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে দেশের মতো প্রবাসেও চলে আনন্দ-উৎসব। প্রবাসে বাঙালিদের আনন্দ দিতে আমরা প্রতিবছর উৎসবের আয়োজন করে আসছি। আমাদের এ উৎসব উপভোগ করেন মালয়েশিয়ান নাগরিকসহ বিদেশিরাও। সকল প্রবাসীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আমাদের ঐতিহ্যকে প্রবাসের মাটিতে তুলে ধরতে পারছি। মালয়েশিয়ায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের ভ্রাতৃত্ববোধ, দেশের প্রতি নাড়ির টান দেখে অতিথি ও দর্শকরা অভিভূত হয়েছেন।
Advertisement
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার, পিঠা-পুলির প্রদর্শনী, মনোমুগ্ধকর নাচ, গান। জমকালো এই অনুষ্ঠান প্রবাসীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। অনুষ্ঠান শেষে র্যাফেল ড্র বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে সবাই গেয়েছে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। এদিন মেয়েরা হাতভরা চুড়ি, খোঁপা আর বেণিতে ফুল গুঁজে রঙ-বেরঙের শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল। আর ছেলেদের পরনে ছিল পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ দেশীয় সাজ।
বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের জন্য ইলিশ মাছ, পান্তা ভাত, সাদা ভাত, ডাল, আলুভর্তা, বেগুন ভর্তা, চেপা শুঁটকি ভর্তা, ব্রকলি ভর্তা, পায়েস, কাঁঠাল বিচি ভর্তা, শুকনো মরিচ ভাঁজাসহ রকমারি দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে মেতে উঠেন প্রবাসী বাঙালিরা। পুরো অনুষ্ঠানটি মুখরিত ছিল হাবিব ওয়াহিদ ও ফেরদৌস ওয়াহিদসহ বাংলাদেশের একঝাঁক শিল্পীদের ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশনায়।
Advertisement
এমবিআর/জেআইএম