খেলাধুলা

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানডে স্ট্যাটাসের নেপথ্যে উইন্ডিজের মার্শাল

দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। চার বছর খেলেছিলেনও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে। কিন্তু ২০০৯ সালের পর ব্রাত্য হয়ে পড়লেন নিজ দেশে। এরপর জাতীয় দলে ফেরার চেষ্টায় বারবার ব্যর্থ হয়ে ২০১৮ সালে নাম লেখালেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে।

Advertisement

তার দেড় বছরের মাথায় হয়ে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেননা তার ব্যাটেই যে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেলো যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জ্যামাইকায় জন্ম নেয়া, সে দেশের ক্রিকেটেই হাতেখড়ি করা যুক্তরাষ্ট্রের ওপেনার হ্যাভিয়ের মার্শালের কথা।

যিনি গত বছরের শুরুতে জ্যামাইকা ছেড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। খেলতে শুরু করেন দেশটির ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় তাকে দলে ভেড়াতে খুব বেশি ভাবতে হয়নি যুক্তরাষ্ট্রকে। আর দলে ঢুকে ৩৩ বছর বয়সী মার্শাল নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতেই।

গত বুধবার নামিবিয়ার উইন্ডোহকে ইউনাইটেড ক্রিকেট ক্লাব মাঠে আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগের ডিভিশন-২'র ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে ৮৪ রানের জয় পেয়েছে যুক্তরাষ্ট। এতেই নিশ্চিত হয়েছে তাদের ওয়ানডে স্ট্যাটাস।

Advertisement

সে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮০ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় উইকেটে স্টিভেন টেলরকে নিয়ে ১৮৪ রানের জুটি গড়েন হ্যাভিয়ের মার্শাল। ২৪ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১টি সেঞ্চুরি করা মার্শাল, শতরানের ইনিংস খেলেন এ ম্যাচেও।

খানিক রয়েসয়ে খেলা ইনিংসে ১৫৪ বলে ঠিক ১০০ রান করে আউট হন মার্শাল। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ইনিংসটিতে ৫টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাঁকান তিনি। সঙ্গী টেলরের ব্যাট থেকে আসে ৮৮ রানের ইনিংস। যুক্তরাষ্ট্র পায় জেতার মতো ২৮০ রানের বড় সংগ্রহ।

পরে আলি খান, কারিমা গোর, সৌরভ নেত্রাভালকারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রানের বেশি করতে পারেনি হংকং। ৮৪ রানের জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র। অবধারিতভাবেই ম্যাচসেরার পুরষ্কার জেতেন হ্যাভিয়ের মার্শাল।

২০০৫ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ওয়ানডে ও টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মার্শালের। তবে যতোটা সম্ভাবনাময় হিসেবে ধরা হয়েছিল নিজেকে ঠিক ততোটা মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৭ টেস্টে ২৪৩, ২৪ ওয়ানডেতে ৩৭৫ এবং ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১২৮ রান করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।।

Advertisement

এরপরই জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১৮ সালে নাম লেখান যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে। অবশ্য ওয়ানডে ক্রিকেটের নবাগত দেশটির ইতিহাসে জ্যামাইকান ক্রিকেটারদের অন্তর্ভুক্তি নতুন কিছু নয়। নব্বইয়ের দশকে খোদ বাংলাদেশের বিপক্ষে আইসিসি ট্রফিতে যুক্তরাষ্ট্র দলে খেলেছিলেন ৪ জ্যামাইকান পেসার। যাদের গড়পড়তা গতি ছিলো ১৪০ কিমি. প্রতি ঘণ্টায়। সে আমলে এত গতির বল খেলতে হিমশিম খেতে হয়েছিল আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নুদের। তবে ৪ উইকেটের জয় ঠিকই তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

এসএএস/এমএস