শামসুল বারী, বশির আহমেদ ও প্রতাপ শংকর হাজরা- বাংলাদেশের হকির তিন কিংবদন্তী। তিনজনই বৃহস্পতিবার এক ছাদের নিচে দাঁড়িয়ে সমর্থন ও শুভ কামনা জানালেন এ প্রজন্মের এক সংগঠক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ এবং তার পরিষদকে। যিনি আগামী ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
Advertisement
রাজধানীর একটি হোটেলে রশিদ-সাঈদ পরিষদের প্যানেল পরিচিতি ও নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে কেবল প্রার্থী-ভোটারদের উপস্থিতিই ছিল না, ছিল হকির তিন-চার প্রজন্মের অনেক উজ্জ্বল মুখের মিলনমেলাও।
হকিতে নির্বাচন নতুন নয়। নির্বাচন নিয়ে রেশারেশিও নতুন নয়। হকির নির্বাচন মানেই দেশের অন্যতম প্রধান এ খেলাটিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়া। এসবের বাইরে এবার নির্বাচন ঘিরে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে একটি পক্ষের আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি ঘোষণা। নির্বাচিত হলে হকির জন্য কী করবেন তা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছে রশিদ-সাঈদ পরিষদ।
যুবলীগ নেতা, আরামবাগ-ফকিরেরপুল এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি, মেরিনার্সের হকি কমিটির চেয়ারম্যান মমিনুল হক সাঈদ হকির নির্বাচনে প্রতিনিধি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। নির্বাচনী জোট বেধেছেন হকির আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঊষা ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ শিকদার এবং আরো বেশ কয়েকটি ক্লাব নিয়ে।
Advertisement
রশিদ-সাঈদ পরিষদের প্রতিপক্ষ সাজেদ-সাদেক পরিষদ। বরাবরের মতোই হকির নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি দেশের দুই বড় ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী। আবদুস সাদেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিনিধি হয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে দাঁড়ালেও তিনি মূলতঃ আবাহনীর।
রশিদ-সাঈদ পরিষদের স্লোগান ‘বাঁচাও হকি’। তাদের দাবি হকি আগের মতো নেই। মরে যেতে বসেছে। তাদের ভাষায় ‘পেছনে হাঁটতে থাকা’ হকিতে চাঙ্গা করতেই তারা এই নির্বাচনে নেমেছেন। আর নির্বাচিত হলে হকির জন্য কী কী করবে তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ভোটারদের।
রশিদ-সাঈদ পরিষদের সাজানো গোছানো ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতিগুলো দেয়া হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ হকিতে নিয়ে যাওয়া। মমিনুল হক সাঈদ বলেছেন, ‘যদি নির্বাচিত হই, আমাদের লক্ষ্য থাকবে ২০২৬ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া এবং ২০২৫ সালের এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল খেলা।’
মমিনুল হক সাঈদ বলেছেন, ‘দেশের হকির বর্তমান অবস্থায় হকিপ্রেমীরা ভীষণভাবে হতাশ। এ পরিস্থিতি থেকে হকিকে মুক্ত করতে আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনে জয়ী হলে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের হকিতে নতুন রূপ দিতে কাজ করবো আমরা।’
Advertisement
বাংলাদেশ হকির কার্যক্রম নিজেদের তালুবন্দী না রেখে বিভিন্ন কমিশনের মাধ্যমে পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মমিনুল হক সাঈদ বলেছেন, ‘দেশের হকির কার্যক্রম পরিচালনা করতে ৫টি কমিশন গঠণ করা হবে। ডেভেলপমেন্ট, হাই পারফরম্যান্স, কম্পিটিশন, ট্রেনিং অ্যান্ড মনিটরিং ও অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিশনের মাধ্যমে পারিচালিত হবে হকির কার্যক্রম। কোন কমিশনের কী দায়িত্ব থাকবে তাও উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে ইশতেহারে।’
আরআই/আইএইচএস/পিআর