খেলাধুলা

বিশ্বকাপে ৩০০ রানও তাড়া করে জিততে পারবে বাংলাদেশ!

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে, ২০১৫ সালে। নিউজিল্যান্ডের নেলসনে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩১৮ রান করে ফেলেছিল স্কটল্যান্ড। যে দলের বিপক্ষে নিশ্চিত জয় ধরেই মাঠে নেমেছিল টাইগাররা, তারাই কি না প্রথমে ব্যাট করতে নেমে করলো ৩০০ প্লাস রান!

Advertisement

বাংলাদেশের জয় কি তবে সুদুর পরাহত? কিন্তু যেটাকে শুরুতে অসম্ভব মনে হয়েছিল, সেটাকে শেষ পর্যন্ত সম্ভব করে তুললো একজনের ব্যাট। তিনি তামিম ইকবাল। তখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেন তিনি। ১০০ বলে আউট জলেন ৯৫ রান করে।

তামিমছাড়াও আরও তিনটি ফিফটি এবং একটি ফিফটির কাছাকাছি ইনিংসেই শেষ পর্যন্ত ১১ বল হাতে রেখেই ৩১৮ রান তাড়া করে ৬ উইকেটের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬২, মুশফিকুর রহীম ৬০, সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৫২ এবং সাব্বির রহমানের অপরাজিত ৪২ রানের ওপর ভর করেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা।

২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের করা ২২৫ রান তাড়া করে ২ উইকেটে জিতেছিল টাইগাররা, ১ ওভার হাতে রেখেই। বিশ্বকাপে মোট ১১ জয়ের বাকিগুলোর মধ্যে আরও তিনটিতে জয় রান তাড়া করে। এর মধ্যে ২০১১ সালেই নেদারল্যান্ডসের ১৬০ রান তাড়া করে ৬ উইকেটে, ২০০৭ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের করা ১৯১ রান তাড়া করে ৫ উইকেটে এবং বার্মুডার করা ৯৪ রান তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ।

Advertisement

সুতরাং, বিশ্বকাপে বড় স্কোর তাড়া করে জয়ের রেকর্ড বলতে গেলে আছে একটিই। তাও সেটা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু ২০১১ সালের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের ৩৭০, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কার ৩৩২, ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মেলবোর্নে ভারতের করা ৩০২ রান, ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ২৮৪ রানগুলো কিন্তু তাড়া করতে পারেনি বাংলাদেশ।

এবার ইংল্যান্ডের উইকেটগুলো হতে পারে পুরোপুরি ব্যাটিং বান্ধব। সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি ম্যাচেই প্রায় ৩০০ প্লাস রান হওয়ার সম্ভাবনা। যে কারণে, বোলারদের চেয়ে ব্যাটসম্যানদেরই এবারের বিশ্বকাপে পরীক্ষা হবে বেশি।

বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবালের কাছে এ কারণেই জানতে চাওয়া হলো, বিশ্বকাপে তো বিগ স্কোরিং ম্যাচ হবে। বাংলাদেশকে কোন কোন ম্যাচে বড় টার্গেট চেজ করতে হতে পারে? তখন দলের অ্যাপ্রোচটাই বা কি হবে?

তামিম ইকবাল তখন বলেন, ‘দেখেন এই একটা জিনিস যেটায় আমরা খুব একটা অভ্যস্ত নই, চেজিং ৩৪০ কিংবা ৩৫০ রান। সাথে এটাও আমরা জানি যে, বিশ্বকাপে হয়তো বেশিরভাগ ম্যাচেই আমাদের ২৮০-৩০০-৩২০ চেজ করতে হবে। সো উই হ্যাভ টু ওয়ার্ক ইট আউট।’

Advertisement

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে যে ম্যাচগুলো খেলবে বাংলাদেশ, সে ম্যাচগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে টাইগারদের জন্য। তামিম বলেন, ‘এ কারণেই এই ট্রেনিং সেশনগুলো বা যে পাঁচটা ম্যাচ আমরা খেলবো আয়ারল্যান্ডে, সেগুলো এত ইম্পর্ট্যান্ট। আমরা ওই প্ল্যানটা কিভাবে এক্সিকিউট করবো, যদি সুযোগ আসে। সুতরাং, আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে যে আমাদেরকে বড় রান তাড়া করতে হবে।’

তবে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলারদেরও দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন তামিম। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, ৩০০ রানে কোন প্রতিপক্ষকে আটকাতে চাইলেও বোলারদেরকে খুব ভালো বল করতে হবে। দুয়েকটা দিন ব্যতিক্রম যেতে পারে, যেদিন আপনি ২৪০-২৫০ রানে অলআউট করে দিতে পারেন।’

তামিম মনে করেন ইংল্যান্ডে ৩০০ রান তাড়া করে জেতা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, ইংল্যান্ড ৩০০ রান চেজেবল। সুতরাং, এটার জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে হয়তো দেখা যাবে, আমরা খুব বেশিবার এরকম রান তাড়া করিনি। তার অনেক বড় কারণ হলো, আমরা যেখানে খেলি, সেখানে ৩০০ রান খুব বেশি হয় না। আশা করবো যে প্ল্যানটা আমাদেরকে দেয়া হবে, সেই প্ল্যানটা ভালোভাবে এক্সিকিউট করতে পারবো আমরা।’

নেটে ব্যাটিং প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন তামিম। বিশ্বকাপে খেলতে গিয়ে যে বিষয়গুলোর মুখোমুখি হতে হবে, সেগুলো মাথায় রেখে এখন কি ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তামিম? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই কন্ডিশনে আমার সাথে হতে পারে, এমন সবকিছু নিয়েই আমি কাজ করছি এবং চেষ্টা করছি। আমি সবসময় বলি যে, প্রস্তুতি পুরোটাই আমার হাতে। এটা নিয়ে আমি যা ইচ্ছা তা করতে পারি। কষ্ট করতে পারি, ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি। মাঠে গিয়ে কি হবে না হবে, সেটা অনেক সময় আমার হাতে থাকে না। তবে ট্রেনিংয়ের দিক থেকে আমি সবই চেষ্টা করছি।’

আইএইচএস/জেআইএম