মংলা-ঘষিয়াখালীসহ বিভিন্ন নৌপথ খনন প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নিরাপদ সড়ক ও নৌপথ বাস্তবায়ন জোট। বুধবার বিকেলে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে এসব দাবি জানানো হয়। পাঁচটি বেসরকারি সংগঠনের মোর্চা নিরাপদ সড়ক ও নৌপথ বাস্তবায়ন জোটের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপিতে জনস্বার্থে এসকল বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।এসময় জোটের পক্ষ থেকে বিদেশ থেকে চড়ামূল্যে আমদানিকৃত ড্রেজার (খননযন্ত্র), সালভেজ ভেসেল (উদ্ধারকারি জাহাজ) ও নৌ-সরঞ্জমাদির গুণগত মান পরীক্ষা এবং কয়েকটি সার্ভে ভেসেল (নদীর গভীরতা পরিমাপক জরিপ জাহাজ) আমদানির ক্ষেত্রে চলমান ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে উত্থাপিত অনিয়মও খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সুন্দরবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প ‘মংলা-ঘষিয়াখালী’ নৌপথের খনন কাজ দীর্ঘ ১৪ মাসেও সম্পন্ন হয়নি। গত বছরের পহেলা জুলাই শুরু হওয়া ২৩০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ গত ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগই ইতিমধ্যে খরচ দেখিয়েছে। একইভাবে ১৪৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মাদারীপুর-চরমুগুরিয়া-টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ’ নৌপথ খনন প্রকল্পটির কাজও গত তিন বছরে শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সরকারের আমলে বিদেশ থেকে কয়েক শত কোটি টাকায় আমদানিকৃত ড্রেজার, উদ্ধারকারি জাহাজ ও নৌ সরঞ্জামগুলোও অত্যন্ত নিম্নমানের উল্লেখ করে এগুলোর গুণগত মান পরীক্ষার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ ৩০ কোটি টাকায় ছয়টি এ্যালুমিনিয়াম সার্ভে ভেসেল ক্রয় প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের মাধ্যমে তাদের পছন্দের একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। অথচ ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত তিনটি ড্রেজারই অত্যন্ত নিম্নমানের এবং একটি ইতিমধ্যেই অচল হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন রক্ষাসহ জাতীয় স্বার্থে এসব অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, সংস্থার কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উল্লেখিত প্রকল্পসমূহের সঙ্গে জড়িত। তারা হলেন- সদস্য (প্রকৌশল) মোহাম্মদ মফিজুল হক, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং ইউনিট) মো. আব্দুল মতিন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন) আতাহার আলী সরদার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং ইউনিট) মো. সাঈদুর রহমান ও পরিচালক (হিসাব) আব্দুল আউয়াল। সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে এসব কর্মকর্তাকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে সাময়িক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে। এইচএস/এসকেডি/পিআর
Advertisement