খেলাধুলা

৩১ বছর বয়সেই অবসরে পেসার নাজমুল

অনেকের ক্যারিয়ারের সুবর্ণ সময় আসে এই বয়সে। অভিজ্ঞতার ঝুলিটাও হয় সমৃদ্ধ। কিন্তু এক সময় বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলা নাজমুল হোসেন ৩১ বছর বয়সেই খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে দিলেন। আজ (মঙ্গলবার) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান ২২ এপ্রিল শেখ জামালের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলা ডানহাতি এই পেসার।

Advertisement

২০০৪ সালে বার্মিংহামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। কিন্তু কখনই জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি নাজমুল। ম্যাচগুলো তিনি খেলেছেন থেমে থেমে বিরতি দিয়ে। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১২ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

চোট সমস্যা ছিল। কখনও বা টিম কম্বিনেশনের দোহাই দিয়ে দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে নাজমুলকে। অথচ মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রতিভার ঝলক দেখিয়েই জায়গা করে নিয়েছিলেন জাতীয় দলে। ৩৮ ওয়ানডেতে ৪৪ উইকেট, ২ টেস্টে ৫ আর ৪ টি-টোয়েন্টিতে ১ উইকেট। পরিসংখ্যানও বলছে খুব একটা খারাপ করেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।

তারপরও ক্যারিয়ারটা বড় হলো না। আক্ষেপ আছে কি? নাজমুল অবশ্য কষ্ট মনে চেপে রাখছেন না। ডানহাতি এই পেসার বলেন, ‘সবমিলিয়ে যদি খেলার দিক থেকে চিন্তা করেন তাহলে কম খেলেছি। কিন্তু দলের সাথে ছিলাম প্রায় ১১ বছর। শেষের দুই বছর, ২০১৪’র পর থেকে আমি সব দিক থেকেই স্ট্রাগল করছিলাম। তখনই আমার মনে হয়েছিল লাকি না হলে আমার ব্রেক করে ফিরে আসা কঠিন হবে। যখন ফিট ছিলাম তখনও আমি ইন অ্যান্ড আউট ছিলাম। আমি প্রথম টেস্ট খেলার পর সাত বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলেছি।’

Advertisement

থেমে থেমে খেললেও বড় ক্রিকেটারদের সান্নিধ্য পাওয়াকে ক্যারিয়ারের বড় প্রাপ্তি মনে করছেন নাজমুল। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, আকরাম ভাই, সুমন ভাই বলেন, উনাদের মত লিজেন্ডদের সাথে খেলতে পারি। আমার যেই বয়স ছিল, মাশরাফি ভাই, সাকিব, তামিম... ওদের সাথে খেলতে পেরেছি। সব মিলিয়ে ক্রিকেট থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। বাংলাদেশ ভারতের সাথে প্রথম ওয়ানডে জিতেছে, সেই ম্যাচটা আমি খেলেছি। প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে, সেটা আমি খেলেছি। প্রথম শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি, সেটা আমি খেলেছি। এইগুলো চিন্তা করলে আমার মনে হয় আমি ভাগ্যবানই ছিলাম। ছোট ক্যারিয়ার, কিন্তু আমার প্রাপ্তি অনেক।’

দ্রুত খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে দেয়ার পেছনে আসল কারণটা কিন্তু অন্য। নাজমুলের ইচ্ছে-পুরোদুস্তোর কোচিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়া। পেস বোলিং কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর করার আগে শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করে নিয়েছেন তিনি।

কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু নিয়ে নাজমুল বলেন, ‘আমি এখনো চিন্তাভাবনা করি নাই। আমি সাকিবের সাথে আলাপ করেছি, মুশফিকের সাথে আলাপ করেছি, রিয়াদের সাথে বা মাশরাফি ভাই, রাজ ভাই, যারা আমার সার্কেল, তাদের সাথে আলাপ করেছি। ওরা সবাই বলেছেন, এক বছর টানাহ্যাঁচড়া করে খেলার চেয়ে কোচিং কর। ওরা বলেছে আমি পারব। আমার তো ন্যাশনাল টিমে কোনো ফিউচার নাই। আমি সুজন ভাই’র সাথে কথা বলেছি। আমি চাই না আমার মত বোলাররা হারিয়ে যাক। আজকের পর তো সিজন শেষ। ঈদের পর আমি শুভাশিষ, শহীদ, আল আমিন, তাসকিন বা ৮-১০ জন যেই বোলার থাকবে, আমি চাইব পারসনালি ওদের সাথে কাজ করতে যেন ওরা আমার মত হারিয়ে না যায়।’

এমএমআর/এমএস

Advertisement