খেলাধুলা

শ্রীলঙ্কায় হামলা : অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ক্রিকেটার শানাকা

শ্রীলঙ্কা এখন যেন মৃত্যুপুরী। দুদিন আগে (২১ এপ্রিল) ইস্টার সানডের সকালে শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩২১ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। যেখানে থাকতে পারতো লঙ্কান জাতীয় দলের ক্রিকেটার দাসুন শানাকার নামও। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।

Advertisement

ইস্টার সানডের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও আরো দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে ৩২১ জনের প্রাণহানি ও আরো ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

২৭ বছর বয়সী শানাকার কপাল ভালোই বলতে হবে। রোববার সকালে মা এবং দাদীর সঙ্গে নিজ শহর নিগম্বোতে সেন্ট সেবাস্তিয়ান চার্চে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু আগের রাতে অনুরাধাপুরা থেকে ১৭০ কিলোমিটার ভ্রমণের পর ক্লান্ত থাকায় বিশ্রাম নিতে বাসায় থেকে যান তিনি। শানাকা বলেন, ‘সাধারণত আমি চার্চে যাই। কিন্তু সেদিন আমাকে অনুরাধাপুরাতে যেতে হয়েছিল, তাই ক্লান্ত ছিলাম।’

চার্চটা শানাকার বাসার কাছেই। সকালে বোমার শব্দ শুনে দৌড়ে যান সেখানে। তারপর যে রোমহর্ষক দৃশ্য দেখেন, সেটা কল্পনাও করতে পারেননি শানাকা। লঙ্কান অলরাউন্ডারের ভাষায়, ‘ওই সকালে আমি বাসায় ছিলাম। আমি একটা শব্দ শুনি, মানুষ বলছিল চার্চে বোমা হামলা হয়েছে। আমি দৌড়ে সেখানে যাই, দৃশ্যটা কখনও ভুলব না। পুরো চার্চ ধ্বংসস্তূপ হয়ে গেছে, অনেকের দেহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে, প্রাণহীন দেহগুলো টেনে বাইরে বের করছেন লোকজন।’

Advertisement

শানাকার মা আর দাদী চার্চে গিয়েছিলেন। পাগলের মতো তাদের খুঁজতে শুরু করেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘আমার প্রথমেই মাথায় এসেছে, মাকে খুঁজে বের করতে হবে। আমি যখন তাকে পেলাম, তাকে ওই এলাকা থেকে দূরে নিয়ে গেলাম। তারপর আমি দাদীকে খোঁজা শুরু করলাম। যখন আমি শুনলাম, তিনি ভেতরেই বসা ছিলেন, মনটা কেঁদে উঠল। যদি আপনি ওই দৃশ্যটা দেখেন, মনে হবে ভেতরে কারোরই বেঁচে থাকার কথা নয়। কারণ বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ আশেপাশের লোকজনকেও আহত করেছে।’

তবে সৌভাগ্যজনকভাবে শানাকার মা ও দাদী দুজনই বেঁচে গেছেন। লঙ্কান ক্রিকেটারের ভাষায়, ‘তিনি (তার মা) জানালার কাছে ছিলেন। কাছের একটা পার্টিশনের কারণে তার গায়ে ওই বিস্ফোরণের তেমন কিছু লাগেনি। তার ছোট একটু আঘাত লেগেছে। অথচ তার পাশের অনেকেই মারা গেছেন।’

আর দাদীর তো বেঁচে থাকারই কথা ছিল না। শানাকা মনে করছেন, সেটা একটা আশ্চর্য ঘটনা, ‘যখন আমি দাদীকে খুঁজে পাই, আমি ভাবিনি তিনি জীবিত থাকবেন। তবে সেটা হয়েছে। বিস্ফোরণে তার পাশের সবাই মারা গেছেন, অন্যদের শরীরের কারণে তার বড় ক্ষতি হয়নি। মাথায় আঘাতে কিছুটা মাংস উঠে গেছে। তবে আমরা তাকে সার্জারির জন্য হাসপাতালে নিতে পেরেছি।’

এমএমআর/এমএস

Advertisement