দেশজুড়ে

১০ জেলে অপহরণ : মুক্তিপণের চিন্তায় পরিবার

বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ১০ জেলেকে অপহরণ করেছেন। অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের দেন দরবার চলছে বলে জানা গেছে। অপহৃত জেলেরা হলেন, উপজেলার চরখালী এলাকার এফ বি মা বাবার দোয়া ট্রলার মাঝি মোস্তফা হাওলাদার, শানু মোল্লা, মিজান হাওলাদার, সোলায়মান, জাহাঙ্গির, হেতালিয়া গ্রামের হারুন, নদমুলা গ্রামের নাসির মাঝি, আ. কাইয়ুম, ইব্রাহিম ও পশারিবুনিয়া গ্রামের রুহুল আমিন। জানা গেছে, জলদস্যুরা এদের মুক্তির জন্য প্রত্যেকের পরিবারের কাছে ছয় লাখ টাকা করে দাবি করছে। গত ২৬ আগস্ট তাদেরকে মাস্টার বাহিনী নামে একটি জলদস্যু দল অপহরণ করে সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে নিয়ে যান। অপহরণের বিষয় অপহৃতদের পরিবারের কাছে জানতে চাইলে তারা মুখ খোলেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে জাগো নিউজকে জানান, পূর্ব পুরুষ থেকে এ পেশায় কাজ করে আসছি। পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে বেশ কয়েকবার সাগরে গিয়ে এ রকম মুক্তিপণ দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে এখন হাট বাজারে ফুটপাতে পুরান জাল বিক্রি করে সংসার চালাই। বুধবার ভাণ্ডারিয়া হাটে গিয়ে দেখা গেছে বাজারের শের-ই-বাংলা সড়ক নামে কর্মকার পট্টির রাস্তার পাশে বসে জাল বিক্রি করছেন তিনি। এসময় তিনি জানান, কয়েক দিন আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে মা-বাবার দোয়া বোর্ডসহ জেলেদেরকে অপহরণ করা হয়েছে। এসব পরিবারের সঙ্গে পৃথকভাবে ঘটনা বা কোন নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছে জানতে চাইলে পরিবারের কেউই কোনো বিষয় মুখ খুলতে রাজি হননি। তাদের বোবা কান্নাই বলে দেয় তাদের ভিটা মাটি থাক বা নাই থাক সব খুইয়ে হলেও তারা তাদের প্রিয়জনকে ফিরে পেতে চান। তাই তারা দস্যু বাহিনীর সঙ্গে দেন দরবার করে যত কম টাকায় দ্রুত সময়ে স্বজনদের অক্ষত ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের এ বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় কোনো দালাল চক্রের খুব ঘনিষ্ঠ সখ্যতা রয়েছে। এদিকে জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর হাতে অপহৃত ভাণ্ডারিয়ার জেলে পরিবারগুলোতে একদিকে স্বজনদের হাহাকার অন্যদিকে তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন লাখ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে অপহৃতদের পরিবার। অপহরণের ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশ হলে জলদস্যুরা জেলেদের উপর অত্যাচার বাড়িয়ে দেন বলে স্বজনরা জানান। এজন্য তারা পারছেন না থানা পুলিশকেও জানাতে। যেসব জেলে অপহৃত হয়েছেন তাদের পরিবার থেকে কোনো প্রকার সাধারণ ডায়েরি বা নিখোঁজের বিষয় অবহিত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার জাগো নিউজকে জানান, বুধবার পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। হাসান মামুন/এমজেড

Advertisement