জাতীয়

আইএসের কেউ বাংলাদেশে ফিরতে চাইলে ব্যবস্থা

জঙ্গি সংগঠন আইএস থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরতে চাইছেন অনেকেই। বাংলাদেশিরা ফিরতে চাইলে তাদের ফেরত নেয়া হবে কি না?

Advertisement

সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, কেউ যদি ফিরতে চায়, তাদের বিষয়ে আইনগত দিক দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মিট উইথ মনিরুল ইসলাম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)।

মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত ২০১৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে আইএসে যোগদান করে অনেকে। আমাদের ধারণা মতে, তাদের কেউ ধরা পড়েছে, কেউ নিহত হয়েছে অথবা কেউ চিহ্নিত হয়েছে। তারা (বর্তমানে আইএসে থাকারা) যদি এখন দেশে ফিরতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে ফিরতে হবে। এর জন্য তাদের পাসপোর্ট লাগবে। যেহেতু তারা ২০১৪ সালের শেষের দিকে গিয়েছিল, তাদের পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা। দেশে ফিরতে হলে তাদের নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করতে হবে। আমরা সিরিয়ালসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে যখন পাসপোর্ট আবেদন পাচ্ছি সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্ট দিচ্ছি। তাই আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে আসা সম্ভব নয়। তাছাড়া কেউ যদি ফিরে আসতে চায়, তাহলে আইনগত দিক বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

সম্প্রতি আইএস’র একটি ভিডিওতে বাংলাদেশে খলিফা নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আইএস’র নিজস্ব দাবি। বাংলাদেশে তাদের কোনো খলিফা নেই। হয়ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কেউ তাদের সঙ্গে থাকতে পারে, তাকেই খলিফা বলে দাবি করছে তারা।

রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে জড়ানোর সম্ভাবনার বিষয়ে সিটিটিসি বিভাগের প্রধান বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। তারা দীর্ঘদিন এ দেশে থাকলে সোশ্যাল ডিজঅর্ডারসহ নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যেতে পারে। তাদের দেশে পাঠাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রোহিঙ্গারা তাদের বাড়ি হারিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে। তবে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা তাদের তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রেখেছে। তারা যদি এমন কিছু করার চেষ্টা করে তাহলে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে আগাম জানতে পারব।

ধর্মভিত্তিক জঙ্গিবাদের আমদানিকারকরা চিহ্নিত হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দিকে যারা আফগানিস্তানে গিয়েছিল তারাই দেশে ফিরে ধর্মীয় ও সহিংসতাভিত্তিক জঙ্গিবাদের সূচনা করে। প্রথমদিকে এই আমদানিকারকদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়। কারো কারো ফাঁসি হয়েছে। তিন-চারজন হয়ত পলাতক রয়েছে, তবে সবাই চিহ্নিত।

কারাগারে জঙ্গিবাদ ছড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি গ্লোবাল সমস্যা। যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে কারাগারে জঙ্গিরা রেডিক্যালাইজড হচ্ছে। বাংলাদেশেও এমন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর অন্যতম কারণ, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা, যার ফলে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকা। তবে এ দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে দুটি সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছে। তাদের মামলাগুলো নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কারাগারগুলোতে সব ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী আসামির মেলামেশার সম্ভাবনা খুব কম।

Advertisement

অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারওয়ার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমানসহ ক্র্যাব নেতৃবৃন্দ ও সিটিটিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এআর/জেডএ/পিআর