দেশে গণমাধ্যম কর্মীদের চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রদানে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দুটি আইন উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আগামীকাল (বুধবার) একটি অধিবেশন শুরু হবে। কিন্তু এ অধিবেশনে আমরা আইন দুটি উপস্থাপন করতে পারব না। তবে আশা করছি, এর পরের অধিবেশনে আইন দুটি উপস্থাপন করতে পারব।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, সারাবাংলা ডটনেট, দৈনিক সারাবাংলা ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষায় গণমাধ্যমকর্মী আইন ও সম্প্রচার আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ের মধ্যে ভেটিং দিয়ে দেবে। এরপরই আমরা আইন দুটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করব। তবে আগামীকাল (বুধবার) শুরু হওয়া অধিবেশনে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে না। আশা করছি, এর পরের অধিবেশনে উপস্থাপন করতে পারব।’
এ আইন দুটি পাস হলে যখন তখন চাকরি চলে যাওয়াসহ সাংবাদিকদের যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেগুলোর আইন প্রটেকশন দেয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
Advertisement
সাংবাদিকদের জন্য আলাদা তহবিল গঠনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জন্য ট্রাস্ট গঠন করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক ট্রাস্টের মাধ্যমে কেউ মারা গেলে বা অসুস্থ হলে সহায়তা করা যায়। অন্য কোনো কারণে সাহায্য করা যায় না। ইতোমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি, চাকরি চলে যাওয়াসহ অন্যান্য অসুবিধায় সহায়তার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হওয়ার কারণে সাংবাদিকদের নানা সমস্যা, প্রতিকূলতা এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সমস্যার সাথে আমি আগে থেকেই পরিচিত। এ কারণে আমি এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর নিজে উদ্যোগী হয়ে এবং গণমাধ্যমের সহায়তায় এসব সমস্যা সমাধানে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
‘এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আইন ভঙ্গ করে বাংলাদেশে ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারিত সব বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করা। পৃথিবীর কোনো দেশেই বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার হয় না। এটি আমরাও বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি’ -বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছিল সেটাকে শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিশৃঙ্খলার জন্য প্রায় হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যাচ্ছে। যেটা বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো পেতে পারতো। এ টাকা দেশি চ্যানেলগুলো পেলে অর্থ সঙ্কট হতো না। অনেক ক্ষেত্রে বার্তা বিভাগ বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে, এগুলো হতো না।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের অভিমত হচ্ছে, ক্যাবল নেটওয়ার্কগুলো যখন ডিজিটালাইজড হবে তখন এটি বাস্তবায়ন সহজ হবে। এ জন্য কোয়াবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা বলেছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ বছরের মধ্যেই ডিজিটালাইজড করতে পারবে। তবে আমি তাদের অনুরোধ জানিয়েছি, ঢাকা-চট্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের সব সিটি কর্পোরেশনে যেন এ বছরই ডিজিটালাইজড করা হয়।’
এমইউএইচ/আরএস/পিআর