জাতীয়

হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের বাপের বাড়িতে নিবন্ধন করতে অনীহা

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম শর্ত হলো যোগ্য নাগরিকদের শনাক্ত করার মাধ্যমে যথাযথভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আজ মঙ্গলবার ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

Advertisement

বিগত ভোটারতালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারী ভোটার কম হয়েছে। এর পেছনে হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের বাপের বাড়িতে নিবন্ধন করতে অনীহা, নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহে অনীহাসহ বেশকিছু কারণকে দায়ী করেছে ইসি।

এই ভোটার তালিকা হালনাগাদে নারীদের অন্তর্ভুক্তির হার যাতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে না যায়, সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের, বিশেষ করে নারী জনপ্রতিনিধিদের (উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি/ পৌর এলাকার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্যসহ সাধারণ আসনের বিপরীতে নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি) সহযোগিতা চেয়েছে কমিশন।

সহযোগিতা চেয়ে নির্বাচন কমিশন এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি জেলা পরিষদ নারী ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ নারী ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি/পৌর এলাকার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের চিঠি দিয়েছে।

Advertisement

ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন সই করা এক নথি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

নথিতে বলা হয়, বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারী ভোটার কম হওয়ার বিষয়ে যেসব কারণ লক্ষ্য করা গেছে, তার মধ্যে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহে অনীহা; হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের পিত্রালয়ে নিবন্ধন করতে অনীহা; অবিবাহিত, অনগ্রসর ও নিরক্ষর মেয়েদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম; বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়া; রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র দূরবর্তী হওয়া; আবহাওয়া অনুকূল না থাকা; সামাজিক সংস্কার ও ধর্মীয় অজুহাতে ছবি তুলতে অনীহা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের অসচেতন হওয়া অন্যতম।

ভোটার তালিকায় নারীদের অন্তর্ভুক্তির হার যেন উল্লেখযোগ্যভাবে কম না হয় সে জন্য হালনাগাদ কার্যক্রমের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য, দফাদার ও গ্রাম পুলিশকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয় নথিতে।

সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা পর্যায়ের সমন্বয় কমিটিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, জনগুরুত্বপূর্ণ এ কাজে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নির্দ্বিধায় এসব কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে তারা প্রচারের কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

Advertisement

ইসি সূত্র জানায়, চলতি ভোটার তালিকা হালনাগাদে যাদের বয়স ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, যাদের জন্ম ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, যাদের জন্ম ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে এবং যাদের জন্ম ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগের – এসব ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ করা তথ্যসংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েক ধাপে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করবেন। ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রথম ধাপে ভোটারদের তথ্য ১৩ মে পর্যন্ত সংগ্রহ করা হবে। এ সময় যাতে কোনোভাবে রোহিঙ্গা ও অবাঞ্ছিত ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

পিডি/এসআর/পিআর