রাজনীতি

কর্মসংস্থান সহায়ক প্রবৃদ্ধিতে জোর দেয়ার তাগিদ

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি যেভাবে বাড়ছে কর্মসংস্থান সেভাবে বাড়ছে না। ফলে আগামীতে কর্মসংস্থান সহায়ক প্রবৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে।

Advertisement

রোববার (২১ এপ্রিল) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) যৌথ আয়োজিত কর্মশালায় এ কথা বলেন বক্তারা।

ইআরএফের কার্যালয়ে আয়োজিত এ কর্মশালার বিষয়বস্তু ছিল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড বাংলাদেশ। ইআরএফের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আইএফসির সিনিয়র ইকোনমিস্ট ড. মাসরুর রিয়াজ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম, বিশ্বব্যাংকের বেসরকারিখাত বিশেষজ্ঞ নুসরাত নাহিদ বাবি, এনবিআরের কাস্টমস মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. গিয়াস কামাল এবং ইউকে এইডের প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজর মুশফিক ইবনে আকবর।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কর্মশালাটি রোববার উদ্বোধন হলো। আগামীতে কয়েকটি পর্বে এটি চলবে। দ্বিতীয় পর্বের বিষয়বস্তু হচ্ছে দেশের বাণিজ্য নীতি। এ ছাড়াও অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা হবে এ কর্মশালায়।

Advertisement

কর্মশালায় ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের (জনসংখ্যার বোনাসকাল) মধ্যদিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর বাংলাদেশে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছে। কিন্তু সেভাবে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। ফলে কর্মসংস্থান তৈরি হয় এ ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থান বাড়াতে না পারলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট দায় হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো আরও বেশি গতিতে এগোচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বিষয় লক্ষণীয় বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আছে, সেগুলো ধরে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু নতুন বিনিয়োগ বাড়ছে না। প্রতিবছর ১ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসছে, কিন্তু এর অধিকাংশই পুনঃবিনিয়োগ। কিন্তু নতুন বিনিয়োগ আসছে না। রফতানি বেড়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের মতো জনসংখ্যার দেশে আরও রফতানি বৃদ্ধি জরুরি।’

খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করতে কাজ করছে সরকার। কাস্টমস থেকে কত সহজে পণ্য খালাস করা যায়, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। আমাদের প্রত্যাশা দ্রুতই এ কাজে সফলতা আসবে।’

Advertisement

আবুল কাশেম বলেন, ‘সহজে ব্যবসা করার সূচকে অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের ইজ অব ডুইং বিজনেস রিপোর্টে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬। কিন্ত ২০০৫-২০০৬ সালে ৬৫তম। বাংলাদেশের এ পিছিয়ে পড়ার কারণ হলো আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো দ্রুত গতিতে সামনে এগিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিডিপির প্রবৃদ্ধিসহ সবকিছুতেই বাংলাদেশের অগ্রগতি হচ্ছে। এরপরও মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের আরও এগোনো দরকার। কারণ আমাদের প্রতিযোগীরা বেশি গতিতে এগোচ্ছে।’

কর্মশালায় ইআরএফের ৮০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন। চার ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের অর্থনীতি, বহুপাক্ষিক বাণিজ্য এবং কাস্টমসের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

এমইউএইচ/এনডিএস/পিআর