দেশজুড়ে

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ ধানের ফলন

মাঠজুড়ে সোনালি ধান। বোরো ধানের গন্ধে ভরে উঠছে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর, নদী ও বিল। কৃষকরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার কেউ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠানে।

Advertisement

বলা যায় খুশির জোয়ার বইছে পুরো হাওর এলাকাজুড়ে। শ্রমিক সংকটের সমস্যা থাকলেও কৃষকের সোনালি ফসলের ধান ও হাসি যেন তা ভুলিয়ে দেয়। হাওরের মাঠে মাঠে বৈশাখের বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে বইছে ধান কাটার আনন্দ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়, এ বছর সুনামগঞ্জে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে এবার বোরোর আবাদ হয়েছে। এ বছর ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে আবাদ হওয়ায় কৃষি বিভাগ মনে করছে, এ বছর ধান উৎপাদন ৮ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন থেকে ৯ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন হবে। হাওরের ফসল ভালো হলেও ধান কাটার শ্রমিক সংকট নিরসনের জন্য বালু পাথর কোয়ারির শ্রমিকদের ধান কাটার কাজে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

রোববার সকালে সুনামগঞ্জের খরচার হাওর ও শনির হাওরে ধান কাটার মাধ্যমে ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বশির আহম্মদ সরকার।

Advertisement

শনি হাওরের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, আল্লাহর রহমতে খুব ভালো ধান হইছে। ২০১৭ সালের মতো যদি বৃষ্টি হইতো তাইলে আমরা হক্কলের সব ধান পানিত গেলো নে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় আমরা সোনার ফসল ফলাইতে পারছি। বৃষ্টি আওয়ার আগে সব ধান কাটতে পারলে খুব ভালো হইবো।

কৃষক শরিফ মিয়া বলেন, এইবার গতবারের ছেয়ে অনেক ভালো ধান হইছে। আমরা খুব খুশি। কারণ আমরার একমাত্র ফসল বোরো। বোরো ফসলের ফলন ভালো হইছে। যদি ন্যায্য দাম ফাই তাইলে বউ-বাচ্চা নিয়া সুখে শান্তিতে থাকতে পারমু।

খরচার হাওরের কৃষক কমল দাশ বলেন, ধান অনেক ভালো হইছে। মাঠো এত সুন্দর ধান দেখিয়া মন খুশিতে ভরি গেছে। এখন আমরা সবাই আনন্দ ও গান গাইয়া ধান কাটরাম। যদি বৃষ্টি না আয় তাইলে ধান সব কাটি লাইত পারমু। আমরা বড় সমস্যা শ্রমিক সংকট। অন্যান্য শ্রমিকরা যদি ধান কাটার লায় আইতো তাইলে আমরা বৃষ্টির আগে ধান কাটি লাইতাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. বশির আহম্মদ সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলায় ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। যদি আবহাওয়ার সমস্যা না হয় তাহলে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সব ধান মাঠ থেকে তুলে ফেলতে পারবেন কৃষকরা। মাঠে শ্রমিক সংকটের জন্য আমরা বালু ও পাথর কোয়ারির শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছিলাম।

Advertisement

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি উপজেলায় বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছি। সব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের আমরা বলেছি তাদের উপজেলাগুলোতে যত বালু, পাথর কোয়ারি রয়েছে সেগুলো বন্ধ রাখার।

মোসাইদ রাহাত/এএম/পিআর