ভালোবাসার টানে ঘর ছাড়ার ঘটনা সমাজে অহরহ দেখা গেলেও দেশ ছাড়ার ঘটনা আধুনিক যুগে বিরল। তবে সম্প্রতি শুধু প্রেমের টানে বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক তরুণ-তরুণী বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন। এবার সেই তালিকায় যোগ হলেন আমেরিকা থেকে প্রেমিকের টানে বাংলাদেশে ছুটে আসা ডংসন লং (৫২)।
Advertisement
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বনানীপাড়ার সোনালী ব্যাংক কর্মচারী শাহাবুল হোসেনের ছেলে ফয়সাল আহমেদের (২৭) প্রেমে পড়ে সুদূর আমেরিকা থেকে প্রেমিকের কাছে ছুটে আসেন মধ্যবয়সী ডংসন লং।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, প্রেম। তারপর বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব ঘুচিয়ে প্রেমিক ফয়সাল আহমেদের কাছে ছুটে আসেন ডংসন লং। সেই সঙ্গে বিয়ে করেন এই যুগল। পাশাপাশি মুসলমান হন ডংসন লং। তার বর্তমান নাম মরিয়ম খাতুন।
তবে শনিবার বিকেলে ফয়সাল আহমেদের বাড়িতে গিয়ে নবদম্পতিকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনানীপাড়ার সোনালী ব্যাংক কর্মচারী শাহাবুল হোসেনের ছেলে ফয়সালের প্রেমে পড়ে আমেরিকা থেকে ছুটে আসেন মধ্যবয়সী এক নারী। পরে গোপনে তারা বিয়ে করেন। কারণ ফয়সালের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তাই কাউকে কিছু না জানিয়ে মার্কিন তরুণীকে বিয়ে করে পালিয়ে যান ফয়সাল।
Advertisement
১৩ এপ্রিল প্রেমিক ফয়সালকে সঙ্গে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জজ আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মুসলমান হয়ে নাম পরিবর্তন করেন ডংসন লং। মরিয়ম খাতুন নামে ১০ হাজার টাকা দেনমোহরে ফয়সালকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর উধাও হয়ে যান তারা। বর্তমানে তারা কোথায় আছেন জানেন না কেউ।
এলাকাবাসী জানান, ফয়সালের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানলেও কাউকে কিছু বলছেন না। বিষয়টি গোপন রাখতে চাইছেন তারা। ফয়সাল হয়তো আমেরিকা যাওয়ার জন্য ওই মধ্যবয়সী নারীকে বিয়ে করেছেন। কয়েক দিন ধরে ফয়সালকে এলাকায় দেখা যায়নি। বিদেশি নারীকে নিয়ে হয়তো অন্য স্থানে চলে গেছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের নোটারি পাবলিকের অ্যাডভোকেট এসএন এ হাশেমী বলেন, মধ্যবয়সী এক মার্কিন নারীর সঙ্গে ফয়সাল নামে এক যুবকের বিয়ে হয়েছে। তারা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন।
১নং আলোকদিয়া ইউনিয়নের কাজী হাশেম আলী বলেন, গত ১৩ এপ্রিল শনিবার এক বিদেশি নারীর সঙ্গে ফয়সাল নামে এক যুবকের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের রেজিস্ট্রারে ফয়সাল চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার বাসিন্দা শাহাবুল হোসেনের ছেলে বলে উল্লেখ করেছেন। মার্কিন নারী ডংসনের নাম এফিডেভিটের মাধ্যমে পরিবর্তন করে মরিয়ম খাতুন রাখা হয়েছে। ১০ হাজার টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে দিয়েছি আমি।
Advertisement
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি ফয়সালের বাবা শাহাবুল হোসেন। ফয়সালের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।
এএম/এমকেএইচ