নাটোরের চন্দ্রকোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের শিক্ষক এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী এ অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তদন্তে ঘটনার সত্যতা তারা পেয়েছেন।
Advertisement
জানা যায়, ১২ এপ্রিল চন্দ্রকোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের ইসলামের ইতিহাসের শিক্ষক আব্দুল জলিলের স্ত্রী মিমি খাতুন কলেজ অধ্যক্ষের কাছে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, তার অনুপস্থিতিতে স্বামী আব্দুল জলিল কলেজের এক ছাত্রীকে নিয়ে নাটোর শহরের উপশহর এলাকায় ভাড়া করা বাসায় যায়। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে শুরু করে। এসময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে বাসার মালিক রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে।
অভিযোগপ্রাপ্তির পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তকালে কমিটি ঘটনার সত্যতা পান।
এ বিষয়ে কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার বলেন, তদন্তকালে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী, ভিকটিম ও ভিকটিমের মায়ের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তে ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। দায়ী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Advertisement
আইনগত ব্যবস্থা নয় কেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাতো ভিকটিম ও তাদের অভিভাবকদের ব্যাপার। এ বিষয়ে তারাই ব্যবস্থা নিতে পারেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, ইতোপূর্বে ইসলামের ইতিহাসের শিক্ষক আব্দুল জলিলের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ বিষয়ে আব্দুল জলিলের স্ত্রী মিমি খাতুন মৌখিকভাবে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করলে আব্দুল জলিল ওয়াদা করেন তিনি কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। এরপর ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। এর কিছুদিনপর ওই কলেজ ছাত্রী আব্দুল জলিলের কাছে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি ফেরত চায়। ছবি ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আব্দুল জলিল তার স্ত্রী মিমি খাতুনের অনুপস্থিতিতে ওই ছাত্রীকে তার বাসায় ডেকে পাঠায় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
চন্দ্রকোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী পারভীন বলেন, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ১৬ এপ্রিল কলেজ শিক্ষক আব্দুল জলিলকে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। জবাব প্রাপ্তির পর ম্যানেজিং কমিটির সভায় এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল জলিল মোবাইল ফোনে এ প্রতিনিধির কাছে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি গত ১২ তারিখ থেকে অসুস্থ রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির নানা বিষয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করায় ষড়যন্ত্র মূলকভাবে তার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
রেজাউল করিম রেজা/এমএএস/পিআর