জীবনের শেষ দিনগুলো ভীষণ অভাব অনটনের মধ্যে পার করেছেন বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশের অভিনেত্রী বিলকিস বারী। জীবনের শেষের দিনগুলোতে সংসার চালাতে তাকে হাত পাততে হয়েছে মানুষের দারে দারে। তিনি মারা যাবার পর তার মেয়ে ভুলু বারীরও জীবন কাটছে মানুষের কাছে হাত পেতে।
Advertisement
কিন্তু বয়স বাড়ছে ভুলুর। আর কতদিনই স্বাভাবিক ভাবে চলা ফেরা করতে পারবেন তিনি। সারাক্ষণ তাকে তাড়া করে ফেরে নানা রকম সঙ্কা। শেষ বয়সে এসে কিছুদিন একটু খানি ভালো থাকতে ইচ্ছে করে তার। কিন্তু কে দাঁড়াবে পাশে। ভুলু বারীর চাওয়া তার মায়ের অবদানের জন্য হলেও প্রধানমন্ত্রী যেনো তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
মুখ ও মুখোশের অভিনেত্রী বিলকিস বারীর মেয়ে এক বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। ভুলু বারী বলেন, ‘আমার মা খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করেছে। মানুষের কাছে ভিক্ষা করে টাকা নিয়ে আইসা আমাদের বড় করছে। শেষ জীবনে সে ভিক্ষা করেই মারা গেছে। ’
তার কষ্টের বিষয় হলো এখন মায়ের পথেই হাঁটতে হচ্ছে ভুলু বারীকেও। সকাল হলেই তিনি চলে আসেন বিএফডিসিতে। পরিচিতদের কাছে টাকা চেয়েই বাড়ি ভাড়া ও পরিবারের খরচ যোগাড় করেন।
Advertisement
ভুলু বারী বলেন, ‘ আমিও সিনেমায় কাজ করেছি। আমার নয় বছর বয়স যখন, তখন প্রথম ‘ডাকবাবু’ ছবিতে নাচের শিল্পী হই। জহির রায়হান সাহেবের ‘সংসার’ ছবিতেও নাচের শিল্পী ছিলাম। বাংলাদেশের প্রথম ছবির নায়িকার মেয়ে হয়েও আজ আমার এই অবস্থা। আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, আমাকে উনি কিছু সাহায্য করুক। আমি প্রধাণমন্ত্রীর কাছে সহযোগীতা চাই।’
উল্লেখ্য, বাংলার প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশে অভিনয় করেছেন বিলকিস বারী। এরপর ‘শ্রাবন মেঘের দিনে’, ‘এখন অনেক রাত’সহ প্রায় চারশর অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের (তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) প্রথম স্থানীয়ভাবে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’। ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি পরিচালনা করেন আব্দুল জব্বার খান। ইকবাল ফিল্মস্ এই ছবিটি অর্থায়ন ও চিত্রায়নে সহায়তা করে।
চলচ্চিত্রটি ১৯৫৬ সালের আগস্ট ৩ তারিখে মুক্তি পায়। এটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং খুলনায় একযোগে মুক্তি পায়। প্রথম দফায় মুক্তির পর চলচ্চিত্রটি ৪৮,০০০ রুপি আয় করেছিল।
Advertisement
এমএবি/পিআর