প্রবাস

যুক্তরাষ্ট্রে এগোচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্রমবর্ধমান। এ কমিউনিটির মানুষ ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে দেশটির মূলধারার রাজনীতিতে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিও দেশটিতে এগোচ্ছে। বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠানগুলোতে দেশটির মূলধারার রাজনীতিকরা আসছেন। বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে তারা মিশে যাচ্ছেন। বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে তারা গর্ব করতে ভুলছেন না। বাংলাদেশিরাও বিষয়টি ভীষণভাবে উপভোগ করছেন। এক সময় যেখানে বাংলা চর্চা করার মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্ট হত সেখানে এখন সমানে লেখালেখি করছেন প্রবাসীরা। আর বাঙালি সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে নিউইয়র্কের বাংলা গণমাধ্যমগুলো।

Advertisement

স্থানীয় সময় সোমবার রাতে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন।

জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশি অধ্যুষিত হাটবাজার পার্টি হলে এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সে দেশের ও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, বিশিষ্টজনরা বক্তব্য দেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শাহ মাহবুব ও রানো নেওয়াজ।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি দর্পণ কবির। উপস্থাপনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর। বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক মনজুর আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ আজাদ, সাপ্তাহিক বর্ণমালার প্রধান সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) সভাপতি শাহ নেওয়াজ, ডেমেক্র্যাটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মুকিত চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা মার্শাল মুরাদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আহসান হাবীব, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বেলাল আহমেদ। বক্তারা বলেন, কমিউনিটি ক্রমবর্ধমান হওয়ার পেছনে এখানকার গণমাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতিকে বেগবান করে চলেছে গণমাধ্যগুলো। একসময় যেখানে কবিতা, ছড়া বা গল্প লেখার জন্য বাংলাদেশি পাওয়া যেত না সেখানে এখন অনেকেই লিখছেন। অনেকেই ভালো ভালো অনুষ্ঠান আয়োজন করছেন। এগুলোর পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে গণমাধ্যম।

Advertisement

তারা বলেন, প্রবাসীদের লেখা, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ এখানকার গণমাধ্যম প্রকাশ করছে। বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো ভালোভাবে প্রচার করছে। গণমাধ্যমকে অনেকেই পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। কমিউনিটির সব অনুষ্ঠান যাতে সফল হয় সে লক্ষ্যে সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। আর সবকিছু সম্ভব হচ্ছে প্রবাসীদের ঐকান্তিক চেষ্টা এবং বাংলা সংস্কৃতির প্রতি অগাধ ভালোবাসার কারণে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশের উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বিশিষ্ট অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, লেখক আহমেদ মাযহার, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মাকসুদুল হক চৌধুরী, কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আবুল কাশেম, এস্টোরিয়া ডিজিটালের কর্ণধার নজরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাসিব মামুন, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান, এক্টিভিস্ট গোপাল স্যানাল, জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি অধ্যাপক রফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোর্শেদা জামান, নারায়ণগঞ্জ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম, রূপসী বাংলার সম্পাদক শাহ জে. চৌধুরী, শোটাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সফল করতে সহযোগিতা করেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন, কোষাধ্যক্ষ তাপস কুমার সাহা, কার্যকরী সদস্য শামসুল আলম, মল্লিকা খান মুনা, সদস্য সীমা সুস্মিতা, শামসুন নাহার নিম্মি, আব্দুল হামিদ, মশিউর রহমান লিটন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন সংগঠনের সদস্য শামীম আল আমীন। সভাপতির বক্তব্যে দর্পণ কবীর বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি প্রেস ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন সৃষ্টি করার। এ জন্য আমরা ইংরেজি বর্ষবিদায়সহ নানা অনুষ্ঠান করে থাকি। আজকে আমরা প্রথমবারের মতো আয়োজন করলাম বাংলা বর্ষবরণ। এ অনুষ্ঠানে আমরা চাইলে অনেক মানুষকে আমন্ত্রণ জানাতে পারতাম। কিন্ত আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি শুধু ক্লাবের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীকে। যারা সবসময় আমাদের পাশে থাকেন। আমরা মনে করি আজকের আমন্ত্রিত অতিথিরা আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের বর্ধিত অংশ। এ সময় তিনি ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন থাকবেন বলে জানান।

সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর বলেন, আমরা চাইলে যে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান করতে পারি আজকের অনুষ্ঠান সেটিই প্রমাণ করে। সবার সহযোগিতা না থাকলে এ ধরনের অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে উপস্থিতিকে মুগ্ধ করেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শাহ মাহবুব ও রানো নেওয়াজ। তাদের সংগীতের সঙ্গে নেচে-গেয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত আনন্দ করেন ক্লাবের সদস্যরা। বৈশাখের অন্যতম অনুসর্গ ইলিশ-পান্তা ভাতের নৈশভোজ ছিল উপভোগ্য।

Advertisement

শাহাব উদ্দিন সাগর/জেডএ/এমকেএইচ