জাতীয়

নামিদামি কোম্পানির ক্যাবল নকল করছে যেসব প্রতিষ্ঠান

>> ১০টি বৈদ্যুতিক ক্যাবল গোডাউন সিলগালা>> চার কোটি টাকার মালামাল জব্দ >> ১০ জনকে ৩২ লাখ টাকা জরিমানা

Advertisement

দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ক্যাবল কোম্পানির ক্যাবল নকল করা হচ্ছে রাজধানীর নবাবপুরে। নামিদামি কোম্পানির লোগো হুবহু নতুন মোড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপর এই নকল ক্যাবল করা হচ্ছে বাজারজাত।

রাজধানীর নবাবপুর এলাকায় নকল ও নিম্নমানের ইলেকট্রিকস ক্যাবল তৈরি কারখানায় অভিযান চালানোর পর এ তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

সোমবার বেলা ২টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় শেষ হয় র‌্যাবের অভিযান। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক ক্যাবল ও যন্ত্রাংশ জব্দ করে র‌্যাব। সেই সঙ্গে ১০টি বৈদ্যুতিক ক্যাবল গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে। ১০ জনকে ৩২ লাখ টাকা জরিমানা এবং দুজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।

Advertisement

র‌্যাব-১০ সিপিসি-৩, লালবাগ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের নির্দেশে একটি বিশেষ টিম গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে ওই নকল ক্যাবল তৈরির কারখানার সন্ধান পান। এরপর সোমবার বেলা ২টায় শুরু হয় অভিযান। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম।

নামিদামি কোম্পানির ক্যাবল তৈরি করছে যেসব প্রতিষ্ঠান

ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার বলেন, নামিদামি কোম্পানির ক্যাবল তৈরি করছে এমন ১০টি প্রতিষ্ঠানের গোডাউন আজ সিলগালা করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- নবাবপুর তাজ মার্কেটের স্টার গোল্ড ফ্যান। এর মালিক মো. আক্তার হোসেন ও মো. শামীমকে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Advertisement

খান মার্কেটের স্বর্ণা ইলেকট্রিক। এর মালিক এনামুল হককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রাব্বি এন্টারপ্রাইজ। এর মালিক এনামুল হককে ৫ লাখ টাকা, জাকির মার্কেটের টিআরবি ক্যাবলসের জামান আহম্মেদকে ৫ লাখ টাকা, টাওয়ার মার্কেটের সিফাত ট্রেডার্সের মালিক ওয়ারেস আহম্মেদকে ৩ লাখ টাকা, জাকির ইলেকট্রিক মার্কেটের ফরহাদ হোসেনকে ৩ লাখ, খান মার্কেটের এসএইচপি ক্যাবলসের মালিক মো. রাসেলকে ২ লাখ, ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজের মাহমুদুল হাসাকে ২ লাখ, ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজের এনায়েত উল্যাহকে ৩ লাখ, জাকির মার্কেটের তানিয়া ক্যাবলসের মালিক আল-আমিনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং খান মার্কেটের তারা ক্যাবলসের মালিক মঈন উদ্দিনকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে কেরানীগঞ্জ জেলখানায় পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, ভোক্তা সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫০ ধারায় নবাবপুর এলাকায় বৈদ্যুতিক ক্যাবলের ওপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন ক্যাবলস কোম্পানি বিআরবি, বিজলী, পলো, বাঁধন, আজিজ, স্কয়ার, আমিন ইলেকট্রিক কোম্পানির নামে নিম্নমানের কপার ও প্লাস্টিক ব্যবহার করে নকল ক্যাবল তৈরি করছে, যা জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা।

সারওয়ার আলম বলেন, বর্তমানে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন করে দেখা যায় যে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে অত্যন্ত নিম্নমানের ক্যাবল ব্যবহার করার কারণে তা থেকে আগুন লেগে বাংলাদেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরকারি নির্দেশনা মতে ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং ক্ষতিকর দ্রব্য জব্দ করে ধ্বংস করতে এ অভিযান চালানো হয়।

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি ক্যাবল কোম্পানির পণ্যের মোড়ক হুবহু নকল করে ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের চেষ্টার দায়ে ১০টি বৈদ্যুতিক ক্যাবল গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে এবং চার কোটি টাকার মালামাল জব্দ করা হয়েছে।

জেইউ/এমএস