দেশজুড়ে

বৈশাখী মেলায় নগ্ন যাত্রাপালা

বৈশাখী মেলার নামে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার জালালপুর গুচ্ছগ্রামে চলছে জুয়া ও অশ্লীল যাত্রাপালা। পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু হওয়া জুয়া ও অশ্লীল যাত্রাপালা সন্ধ্যা থেকে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। সেই সঙ্গে মেলার আড়ালে চলে মাদক বিক্রি ও সেবন। চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সীরা এখানে বেশি ভিড় জমাচ্ছেন।

Advertisement

সোমবার রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, জালালপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পের পশ্চিম পাশে খেলার মাঠে যাত্রা মঞ্চটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে চলছে যৌন উত্তেজক গানের তালে তালে অশ্লীল নাচ। পাশেই বিশাল কাঠের চৌকি পেতে লাইটিং দিয়ে চলছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও তরুণ থেকে শুরু করে সব বসয়ী মানুষকে ভিড় জমাতে দেখা যায়।

মেলায় আগত রূপসী গ্রামের রুবেল ও হাসান আলী জানায়, তারা দুই বন্ধু এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বৈশাখী মেলার কথা শুনে বেড়াতে এসে জুয়া ও যাত্রাপালা দেখে হতবাক। দুদিন ধরে মাইকের উচ্চ গানের শব্দে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানায় তারা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সৈয়দপুরের মৃত সোরহাব হাজীর ছেলে প্রভাবশালী রফিকের নেতৃত্বে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মেলার আয়োজকরা এতটাই বেপরোয়া যে নামাজের সময় তাদের মাইক বন্ধ করে না। এছাড়া দিনব্যাপী চলে গ্রামের পথে পথে মাইকিং। আর সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা ও নগ্নযাত্রা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মানুষগুলো অসহায় হত-দরিদ্র হওয়ায় তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তারা ভাঙা ঘরে নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন।

Advertisement

এ ব্যাপারে মেলার আয়োজক রফিক বলেন, বৈশাখী মেলা সারাদেশে চলছে। এখানে চললে সমস্যা কি? আর মেলায় একটু-আধটু খেলা চলবেই। মেলার আয়োজক কমিটিতে গ্রামের অনেকেই রয়েছেন, আমি শুধু একা নয়। সবাইকে ম্যানেজ করেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, আমার কিছুই করার নেই। পারলে আপনারা জুয়া ও নগ্নযাত্রা বন্ধ করে দেন। আমার কোনো আপত্তি নেই।

এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানা পুলিশের ওসি মাহবুবুল আলম বলেন, যাত্রা ও জুয়া চলার খবর আমাদের কাছে নেই। অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন খান বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

Advertisement

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এএম/জেআইএম