আইন-আদালত

ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আম বাগান পাহারা দেবে পুলিশ

রাজশাহীসহ দেশের বড় আম বাগানগুলোতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার রোধে সাত দিনের মধ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন নয়, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পুলিশকে নজরদারী করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

এদিকে আমের বাগানে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার ঠেকানোর জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি প্রত্যাহার করে নিতে চাইলে মঙ্গলবার আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের চেম্বার জজ আদালত তা উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে আদেশ দেন।

ফলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আপিল বিভাগে বহাল থাকছে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো.আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

হাইকোর্টের লিখিত আদেশ হাতে পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বাশার জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজশাহীসহ দেশের বড় আমবাগানগুলোতে যেন কেউ ক্ষতিকর কেমিক্যাল প্রয়োগ করে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ বিষয়টি মনিটরিং করবে।

Advertisement

আমরা দেখেছি হাইকোর্টের আদেশ আইনের সঙ্গে সম্পূরক এবং জনগণের স্বাস্থ্য সেবার জন্য অত্যন্ত সহায়ক। তিনি জানান, হাইকোর্টের আদেশ সঠিক হয়েছে। এ কারণে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে যে আবেদন করেছি সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টের লিখিত আদেশটি এখনও দেখেননি উল্লেখ করে জানান, ‘রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন। আবেদনটি শুনানির জন্য উঠলে তা প্রত্যাহার করে নিতে চাইলে আদালত উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।’

আরও পড়ুন >> আম বাগান পাহারায় পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ থাকলে বিষয়টি খুব ভালো হয়েছে। চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারবেন।’

Advertisement

আমে যেন কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ না হয় সেটি নিশ্চিতে গত ৯ এপ্রিল রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আম বাগানে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সাতদিনের মধ্যে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজিকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

এ ছাড়া ফলের বাজার ও আড়তে আমসহ অন্যান্য ফলে রাসায়নিক মেশানো বা ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে কি না- তা নজরদারি করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করতে বলা হয়। পুলিশের আইজি, বিএসটিআই, র্যাব মহাপরিচালককে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

আসন্ন আমের মৌসুমকে সামনে রেখে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা এক রিটের সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৯ এপ্রিল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদের করা এক রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট সাত দফা নির্দেশনা দেন। সেখানে আমের মৌসুমে রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ এবং একটি পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করতে বলা হয়। যার ধারাবাহিকতায় নতুন করে আমের মৌসুম আসায় আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে এক সম্পূরক আবেদন করে নির্দেশনা চান।

এফএইচ/এনএফ/এমএআর/এমএস