এবার মসজিদে নারীদের নামাজের অনুমতি দিতে শুনানিতে রাজি হয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা মেয়েদের মসজিদে কোনও বাধা-নিষেধ ছাড়াই প্রবেশের আবেদন খতিয়ে দেখবেন।
Advertisement
এই মর্মে সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ডকে নোটিশও দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আমরা শবরীমালা মন্দির বিষয়ে রায়ের কারণেই এই মামলার শুনানিতে রাজি হয়েছি। আমরা বিষয়টি দেখব।
গত সেপ্টেম্বরে কেরালার শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিয়ে একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
মহারাষ্ট্রের এক মুসলিম দম্পতির আবেদনে সাড়া দিয়ে শীর্ষ আদালত তাদের জিজ্ঞাসা করে, কোথাও ধর্ম পালন করতে গিয়ে কোনও মসজিদে কেউ কি তাদের থামিয়েছিল কিনা। আদালত ওই দম্পতিকে বেশ কিছু প্রশ্ন করেছেন- আপনি কি চান অন্য মানুষরা আপনাকে সমান চোখে দেখুক? এটা কি কোনও বিচ্ছিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? আপনি কি অন্য নাগরিকদেরও স্বাধীনতা দাবি করেন?
Advertisement
সকলের সমান অধিকার সমান অধিকার বিষয়টি রাজ্য অগ্রাহ্য করতে পারে না। গির্জা বা মসজিদ কি রাজ্য? যদি কেউ কারো নিজের বাড়িতে আপনাকে ঢুকতে না দেয় তা হলে আপনি কি পুলিশের সাহায্য নিতে পারেন? শীর্ষ আদালত এভাবেই ওই দম্পতিকে প্রশ্ন করেছে।
ইয়াসমিন জুবের আহমেদ পেরিজাদ এবং জুবের আহমেদ নামের এক দম্পতি আদালতে তাদের আবেদনে জানিয়েছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টের শবরীমালা মন্দিরের রায় দেখে খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং তারা মসজিদে লিঙ্গের ভিত্তিতে হওয়া অসাম্যের বিরোধী।
আবেদনে বলা হয়েছে নারীদের মসজিদে ঢুকতে না দেওয়াটা আইনত অন্যায় এবং সংবিধানের ১৪, ১৫, ২১, ২৫ ও ২৯ নম্বর ধারাকে অগ্রাহ্য করার সমান।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনের কোথাও এমন বলা নেই যে, মেয়েরা মসজিদে প্রার্থনা করতে পারবে না। কোরআন কখনওই পুরুষ ও নারীর মধ্যে বিভেদ করে না। শুধু বিশ্বাসের কথা বলে। কিন্তু ইসলাম তার পরিবর্তে একটি ধর্মে পরিণত হয়েছে যারা নারীদের প্রতি শুধুমাত্র দমনমূলক আচরণ করে।
Advertisement
গত বছর ২৮ শে সেপ্টেম্বর মুখ্য বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ৫ জন বিচারকের একটি বেঞ্চ শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিয়ে একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল। তবে সেই রায়ের পরে মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। অশান্তি এবং হিংসা ছড়িয়েছিল।
টিটিএন/পিআর