পহেলা বৈশাখে যশোরের চৌগাছা উপজেলায় চারজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় এসব ঘটনা ঘটে। তবে তারা সবাই শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
Advertisement
রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কয়ারপাড়া গ্রামের তিন সন্তানের জনক আবদুর রশিদ (৪০), তার স্ত্রী আছমা খাতুন (২৮) ও রশিদের পরকীয়া প্রেমিক দুই সন্তানের জননী ডলি খাতুন (৩০) কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
ডলির স্বামী আবদুর রশিদের চাচাতো ভাই ও শ্যালক। তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী। এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জগদিশপুর গ্রামের মৃত বকুল হোসেনের কন্যা শারমিন খাতুন (১৪) গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
চৌগাছা হাসপাতালে আবদুর রশিদের স্বজনরা জানান, আবদুর রশিদ প্রেম করে তার চাচাতো বোন আছমা খাতুনকে বিয়ে করেন। তিনি কিছুদিন প্রবাসে ছিলেন। এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। এরপরও তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী আপন শ্যালক ও চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ডলির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া করে আসছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে রশিদের স্ত্রী একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। তখন আবদুর রশিদ প্রতিজ্ঞা করেন আর এমন করবেন না। কিছুদিন পর ফের ডলির সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হন তিনি। সেই যাত্রায়ও প্রতিজ্ঞা করে রেহাই পায় রশিদ-ডলি। তারপরও গোপনে সম্পর্ক রেখে আসছিলেন উভয়েই।
Advertisement
পহেলা বৈশাখের দিন আবারও তাদের পরকীয়া সম্পর্ক ধরা পড়ে। এতে বাড়িতে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় রশিদের স্ত্রী কীটনাশক পান করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে গ্রামের মানুষের সহানুভূতি পেতে রশিদও কীটনাশক পান করেন।
স্থানীয়রা উভয়কে উদ্ধার করে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়। এ ঘটনায় গ্রামবাসী তিরস্কার শুরু করলে ডলিও কীটনাশক পান করেন। তাকেও উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে নেয়া হয়।
ডলির মা বলেন, রশিদের স্ত্রী-কন্যা মারপিট করেছে বলে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। পরকীয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আর উত্তর দেননি। আবদুর রশিদ বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে তিনি একাজ করেছেন।
আছমা খাতুন বলেন, আমার মেয়েরা বড় হয়েছে। তাদের বিয়ে দিতে হবে। বারবার বলা সত্ত্বেও আমার স্বামী পরকীয়ার পথ থেকে সরে না আসায় হতাশায় কীটনাশক পান করি।
Advertisement
এ দিকে একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জগদিশপুর গ্রামের মৃত বকু হোসেনের মেয়ে শারমিন খাতুন (১৪) গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকেও গ্রামবাসী উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সে জগদিশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তবে কী কারণে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা জানা যায়নি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুঞ্জুরুল হাসান জানান, চারজনই বর্তমানে শঙ্কামুক্ত আছেন।
মিলন রহমান/এমএএস/জেআইএম